Print Date & Time : 15 September 2025 Monday 4:34 am

বিশ্ববাজারে চালের দাম আট বছরে সর্বনিম্ন

শেয়ার বিজ ডেস্ক : বিশ্ববাজারে চালের দাম গত আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেছে, যা এশিয়ার অনেক কৃষকের জন্য বড় ধাক্কা। রেকর্ড উৎপাদন ও ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় বাজারে সরবরাহ বেড়ে গেছে। তাতেই কমেছে চালের দাম। খবর: এফটি।
থাইল্যান্ডের পাঁচ শতাংশ ভাঙা সাদা চালের রপ্তানি মূল্য বিশ্ববাজারের মানদণ্ড হিসেবে পরিচিত। এই চালের দাম স¤প্রতি টনপ্রতি ৩৭২ দশমিক ৫০ ডলারে নেমে গেছে। গত বছরের শেষ ভাগের তুলনায় এই দাম ২৬ শতাংশ কম। সেই সঙ্গে ২০১৭ সালের পর সর্বনি¤œ। কিন্তু বিশ্ববাজারে চালের দাম কমলেও দেশের বাজারে তার প্রভাব নেই।
চালের দামের এই পতন শুরু হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ধাপে ধাপে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে শুরু করে তখন। এই ঘটনা চালের বাজারে বড় প্রভাব ফেলে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সব ধরনের চালের মূল্যসূচক ১৩ শতাংশ কমেছে। খবর: ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস (এফটি)।
ভারতের তেলেঙ্গানা স্টেট অ্যাগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটির অধীন সেন্টার ফর সাসটেইনেবল অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের পরিচালক সমরেন্দ্র মোহান্তি এফটিকে বলেন, বিষয়টি খুবই সহজসরলÑবাজারে অতিরিক্ত সরবরাহ। গত বছর ভারতে চাল উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে। এ বছরও আবার রেকর্ড ফলন হবে।
অথচ ২০২৪ সালের শুরুতে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। তখন ভারত একের পর এক রপ্তানি সীমাবদ্ধতা জারি করলে ২০০৮ সালের পর চালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মানুষের মধ্যে মজুতের প্রবণতা তৈরি হয়। অন্যান্য উৎপাদক দেশেও সুরক্ষাবাদী পদক্ষেপ নেয়া হয়।
রাবোব্যাঙ্কের সিনিয়র বিশ্লেষক অস্কার ত্যাজক্রা বলেন, ২০২৩-২৪ মৌসুমে রেকর্ড উৎপাদনের পর ভারতের সরকারি গুদাম পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় বছরের শেষ দিকে রপ্তানি নীতিতে পরিবর্তন আনে ভারত। তখন থেকে রাশ আলগা শুরু করে। এটাই চালের দাম কমে যাওয়ার প্রধান কারণ। তার সঙ্গে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপণন মৌসুমে বিশ্বের চাল উৎপাদন রেকর্ড পর্যায়ে ওঠে।

সেইসঙ্গে দাম কমার ক্ষেত্রে বাজারের আরেকটি অমোঘ নিয়ম হলো, চাহিদা কমে যাওয়া। চালের বড় ক্রেতা ইন্দোনেশিয়া গত বছর আগাম আমদানি করে রেখেছে। ২০২৫ সালে তারা বাজার থেকে চাল কেনেনি। ফিলিপাইনও প্রধান ফসল কাটার সময় অভ্যন্তরীণ দাম রক্ষা করতে অক্টোবর পর্যন্ত চাল আমদানি বন্ধ রেখেছে। মোহান্তি বলেন, ইন্দোনেশিয়া নেই, ফিলিপাইন নেইÑএ মুহূর্তে সাদা চালের ক্রেতা নেই।
এফটির সংবাদে বলা হয়েছে, ভারতের এই অস্বাভাবিক সরবরাহ কৃষিক্ষেত্রে অগ্রগতির ফল। দেশের প্রধান ধান উৎপাদন অঞ্চলের প্রায় সবখানেই এখন সেচব্যবস্থা রয়েছে। ফলে খরা ও অনিশ্চিত মৌসুমি বৃষ্টির সময় চালের উৎপাদন সুরক্ষিত থাকছে।