নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকায় চাঁদা না দেওয়ায় পাথরের আঘাতে নিহত ব্যবসায়ী সোহাগের দাফন হয়েছে নিজ জেলা বরগুনায়। ভয়, আতঙ্ক আর ক্ষোভ নিয়ে খানিকটা গোপনেই দাফন হয়েছে সোহাগের।
গতকার শুক্রবার (১১ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে তড়িঘড়ি করে ছোট পরিসরে জানাজা নামাজ শেষে তার নানাবাড়ি বরগুনা সদরের ইসলামপুর এলাকায়।
এর আগে ওই দিন সকাল ৯টার দিকে লাল চাঁদ ওরফে সোহাগের মৃতদেহ নিয়ে আসেন স্বজনরা।
এদিকে নিহত সোহাগের পরিবারে বইছে শোকের মাতম। স্বজনদের দাবি, হত্যাকারীরা মাসে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলো সোহাগের কাছে। এদিকে মামলায় হত্যাকারীদের বাদ দিয়ে পুলিশ তড়িঘড়ি করে স্বাক্ষর নিয়েছে বাদীর।
বাবা সোহাগের নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকারে ভয়, আতঙ্ক ও ক্ষোভ নিয়ে অঝোরে কাঁদছে মেয়ে সোহানা (১৪) ও ছেলে সোহান (৮)। বাবাকে হারিয়ে শোক সহ্য করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে তারা।
সোহাগের মেয়ে সোহানা রাইজিংবিডিকে বলেন, “চাঁদা না দেওয়ায় আমার বাবাকে পাথর দিয়ে মেরে হত্যা করেছে বিএনপির সন্ত্রাসীরা। আমাদের সাজানো গোছানো পরিবারটা শেষ করে দিয়েছে।”
সোহাগের ভাগ্নি বিথি বলেন, “মামা আর আমরা ঢাকায় থাকতাম। বাকি সবাই বরগুনায়। আমার মামা প্রথমে কর্মচারী ছিল। গত পাঁচ বছর ধরে নিজেই ভাঙ্গারি ব্যবসা শুরু করেন। কয়েকমাস আগে থেকে মাসে দুই লাখ টাকা চাঁদা নেওয়া শুরু করে মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিনসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা। বুধবার বিকেলে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে সোহাগকে আটকে রেখে দফায় দফায় নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। আমরা তার মৃতদেহ নিয়ে এসে গোপনে দাফন করেছি। কারণ হত্যাকারীরা একটি দলের নেতা। তাদের দলের লোক এখানেও আছে।”
এদিকে এই ঘটনায় দায়ের করা মামলা নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে কারসাজির অভিযোগ নিহত সোহাগের স্বজনদের।
মামলার বাদী মঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, “মামলা দায়েরের সময় আমি যে কপি থানায় দিয়েছি সেটি বাদ দিয়ে সুকৌশলে এজাহার হিসেবে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে অন্য আরেকটি কপিতে। তাতে প্রথম কপিতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ১৭, ১৮ এবং ১৯ নম্বর আসামির নাম বাদ দিয়ে হত্যাকাণ্ডে সঙ্গে জড়িত নয়, এমন অনেককে আসামি করা হয়েছে।”
তবে, এ অভিযোগের বিষয়ে ঢাকার কোতয়ালী থানার ওসির মুঠোফোন নাম্বারে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এই ঘটনায় কেরানীগঞ্জ থেকে মনির হোসেন ও আলমগীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১০। এর আগে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিন ও সবশেষ মো. টিটন গাজী নামে আরও এক এজাহার নামীয় আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে কোতয়ালী থানা পুলিশ।