শেয়ার বিজ ডেস্ক : সিন্ধু নদসহ পানিবণ্টন চুক্তি ইস্যুতে ভারতকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। ইসলামাবাদে আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের পানির এক ফোঁটাও কাউকে নিতে দেব না। যদি কেউ এমন চেষ্টা করে, তাহলে এমন শিক্ষা দেয়া হবে, যা সারাজীবন মনে থাকবে।’ খবর- বিবিসি।
সম্প্রতি জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে এক ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালি নাগরিক নিহত হন। হামলার দায় স্বীকার করে পাকিস্তানভিত্তিক গোষ্ঠী ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’। এই ঘটনার জের ধরেই ভারত ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি একতরফাভাবে স্থগিত করে।
এর ফলে পাকিস্তানে প্রবাহিত ঝিলাম, চেনাব ও সিন্ধু নদীর পানিপ্রবাহে বিঘ্ন ঘটে এবং দেশটির কৃষি ও বিদ্যুৎ খাত মারাত্মক হুমকির মুখে পড়ে।
চুক্তি স্থগিতের ঘটনায় পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে মামলা করে। গত ৮ আগস্ট আদালত রায় দেয়, যেখানে ভারতকে চুক্তিতে ফিরে যেতে বলা হয়। সেই সঙ্গে জানানো হয়, যেকোনো বাঁধ বা জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণে চুক্তির শর্ত মেনে চলতে হবে।
পাকিস্তান এই রায়কে স্বাগত জানালেও ভারত এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র সফররত পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল অসীম মুনির ফ্লোরিডায় এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘ভারত যদি সিন্ধু নদে একতরফাভাবে বাঁধ নির্মাণ করে, তাহলে তা ধ্বংস করতে আমাদের ১০টি ক্ষেপণাস্ত্রই যথেষ্ট। সিন্ধু নদ কারও পারিবারিক সম্পত্তি নয়, আর আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রের কোনো ঘাটতি নেই।’
১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি চুক্তি অনুযায়ী—
ভারত পূর্বাঞ্চলের ইরাবতী, বিপাশা ও শতদ্রু নদীর পানি ব্যবহার করতে পারে
পাকিস্তান পশ্চিমাঞ্চলের সিন্ধু, ঝিলাম ও চেনাব নদীর পানি ব্যবহার করে
চুক্তিতে একতরফাভাবে বাতিল বা স্থগিতের সুযোগ না থাকলেও, বিরোধ মেটাতে আন্তর্জাতিক সালিশি ব্যবস্থা রয়েছে। পাকিস্তানের কৃষি ও সেচব্যবস্থা বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ—এই নদীগুলোর পানির ওপর নির্ভরশীল। প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হলে দেশটির খাদ্য নিরাপত্তা ও জ্বালানি উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।