নিজস্ব প্রতিবেদক : ভরা মৌসুমেও বাড়ছে ইলিশ মাছের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে মাছ কম পাওয়া ও রপ্তানির কারণে গত সপ্তাহের তুলনায় ইলিশের দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর নিউমার্কেট হাজারীবাগসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।
বাজারে এখন এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকায়। একই ওজনের ইলিশ গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ১০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায়। ৫০০ গ্রামের বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১ হাজার ৪০০ টাকা। ৫০০ গ্রামের কম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকা কেজি দরে
সরবরাহ কম থাকায় এ সপ্তাহে অন্যান্য মাছের দামও বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়। প্রতি কেজি চাষের পাঙ্গাশ ২১০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, মাঝারি আকারের কৈ ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, দেশি শিং ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় আকারের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সরবরাহ কম থাকায় গত সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম গড়ে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এখন বাজারে দেশি শসা ৭০ টাকা, বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, দেশি গাজর ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, বরবটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৭০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৪০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৩০ টাকা, পটোল ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, মুলা ৭০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, শিম ১৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ১৮০ টাকা, প্রতি পিস ফুলকপি ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৭০ টাকা এবং জালি কুমড়া ও লাউ ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতি কেজি চালের দাম কমেছে ১ থেকে ২ টাকা। এখন বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি নাজিরশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৪ থেকে ৭৮ টাকায়, মাঝারি মানের ব্রি-২৮ জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬২ টাকায়। পাইজামের দাম এখন ৫৮ থেকে ৬০ টাকা প্রতি কেজি। স্বর্ণা ও গুটি চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকা কেজি দরে।
দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি দরে। আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা এবং দেশি আদা ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ সপ্তাহে বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। সোনালি জাতের মুরগির বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকায়, গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়।
রাজধানীর হাজারীবাগ কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী খায়রুল ইসলাম শেয়ার বিজকে বলেছেন, ইলিশ এখন বিলাসী পণ্য। আমাদের মতো নিম্ন আয়ের মানুষের পক্ষে ভরা মৌসুমেও ইলিশ কেনা সম্ভব হচ্ছে না। দাম শুনে চলে যাচ্ছি। এখন আবার বলছে, রপ্তানির জন্য নাকি দাম বেড়েছে।
আক্ষেপ করে তিনি বলেন, এ বছর মনে হয় আর ইলিশ খাওয়া আর হবে না। কারণ আগামী মাসে আবার ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেবে সরকার। এখন ইলিশ শুধু নামেই জাতীয় মাছ। এটা এখন ধনীদের মাছ বলতে পারেন।
রাজধানীর সালেক গার্ডেন কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ এমদাদুল ইসলাম শেয়ার বিজকে বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আশা করছি, আগামী মাসে বাজারে শীতকালীন সবজি আসতে শুরু করলে দাম কমবে।

Print Date & Time : 20 September 2025 Saturday 5:00 am
মাছ ও সবজির দাম বাড়লেও কমেছে মুরগির
অর্থ ও বাণিজ্য,পত্রিকা,শেষ পাতা ♦ প্রকাশ: