শেয়ার বিজ ডেস্ক : দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ায় অভিবাসনবিরোধী বড়সড় অভিযান চালানো হয়েছে। দেশটির রাজধানী কুয়ালালামপুরে রাতের আঁধারে চালানো এই অভিযানে ৭৭০ জন অনিবন্ধিত অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ।
আটককৃতদের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন বাংলাদেশি। এছাড়া আটকদের মধ্যে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশের নাগরিকরাও রয়েছেন। গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম নিউ স্ট্রেইট টাইমস।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের বুকিত বিনতাং এলাকায় রাতের বেলায় চালানো অভিযানে ৭৭০ জন অনিবন্ধিত অভিবাসীকে আটক করেছে দেশটির অভিবাসন বিভাগ। অভিযানের সময় দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় বিভিন্ন দেশের শত শত অভিবাসী টেবিলের নিচে লুকিয়ে, দোকানের ভেতরে আশ্রয় নিয়ে, কিংবা ছাদে উঠে পালানোর চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ধরা পড়েন।
‘অপস বেলাঞ্জা’ নামে পরিচিত এ অভিযানের সময় মাত্র দুই ঘণ্টায় রাতের বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত বুকিত বিনতাংকে পরিণত করে লকডাউন জোনে। এ সময় পর্যটকে ভরা সড়কগুলো চারদিক থেকে ঘিরে ফেলেন কর্মকর্তারা। তিন ব্লকের প্রতিটি প্রবেশ ও প্রস্থানপথ অবরুদ্ধ করে তারা নথি পরীক্ষা চালান এবং লুকিয়ে থাকা অভিবাসীদের বের করে আনেন।
স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হওয়া এ অভিযানে পুত্রজায়া থেকে আসা অভিবাসন বিভাগের ১০৬ কর্মকর্তা অংশ নেন। অভিযানটি নেতৃত্ব দেন অভিবাসন বিভাগের পরিচালক বাসরি ওসমান। তিনি জানান, মোট ২ হাজার ৪৪৫ জনকে তল্লাশি করা হয়, এর মধ্যে ১ হাজার ৬০০ জন বিদেশি এবং ৮৪৫ জন স্থানীয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বাংলাদেশি রয়েছেন ৩৯৬ জন। তাদের মধ্যে রয়েছেন ৩৯৪ পুরুষ ও দুই নারী। এছাড়া রয়েছেন মিয়ানমারের ২৩৫ জন পুরুষ, নেপালের ৭২ জন, ভারতের ৫৮ জন, ইন্দোনেশিয়ার ১৭ জন পুরুষ ও দুজন নারী এবং আরও ৯ জন বিভিন্ন দেশের নাগরিক।
তিনি জানান, অনিবন্ধিত এসব অভিবাসীদের আটক হওয়ার প্রধান কারণ হলো মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসা, বৈধ পরিচয়পত্র না থাকা এবং অনুমতি ছাড়া কাজ করা।
বাসরি ওসমান বলেন, এলাকাটিতে অনিবন্ধিত অভিবাসীদের অবস্থানের বিষয়ে প্রচুর অভিযোগ পাওয়ার পরে এই অভিযান চালানো হয়। তিনি জানান, ‘বুকিত বিনতাং অনেক দিন ধরেই হটস্পট। নাইটলাইফ ও শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থানের কারণে অনিবন্ধিত শ্রমিকদের জন্য এটি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। আমরা তিন সপ্তাহ ধরে পর্যবেক্ষণ চালানোর পর অভিযান পরিচালনা করি।’
অভিযানে কর্মকর্তারা একটি গোপন জুয়ার আসরও খুঁজে পান, যেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো ছিল। সেখানে অনলাইন জুয়া খেলছিল সাত থেকে আটজন বিদেশি। তাদেরও আটক করা হয়।
বাসরি জানান, আটককৃত ব্যক্তিদের প্রথমে প্রাথমিক যাচাইয়ের জন্য পুত্রজায়ার অভিবাসন দপ্তরে নেয়া হবে, এরপর তাদের আটককেন্দ্রে পাঠানো হবে।

Discussion about this post