Print Date & Time : 11 August 2025 Monday 11:17 pm

মিথ্যা তথ্যে ‘শূন্য’ রিটার্ন দিলে পাঁচ বছর জেল

নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘জিরো রিটার্ন’ (শূন্য রিটার্ন) নামে কোনো রিটার্ন দাখিলের বিধান নেই বলে জানিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সংস্থাটি জানায়, করদাতার প্রকৃত আয়ের পরিমাণ আইনানুযায়ী করযোগ্য না হলে তাকে কোনো কর পরিশোধ করতে হবে না।

তবে আয়কর রিটার্নে আয়-ব্যয়, সম্পদ ও দায়-সম্পর্কিত সঠিক তথ্য না দিলে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে বিধানের কথা জানিয়েছে সংস্থাটি। এক বিবৃতিতে গতকাল রোববার এ তথ্য জানান এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আল আমিন শেখ।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গত অর্থবছরের ১৭ লাখের মতো করদাতা অনলাইনে রিটার্ন দেন। তাদের মধ্যে ৭০ শতাংশ করদাতা কোনো কর দেননি। তবে রিটার্ন দিয়েছেন।

বর্তমানে এক কোটি ১২ লাখ কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) আছেন। তাদের মধ্যে বছরে ৪০ লাখের মতো করদাতা রিটার্ন দেন। চলতি অর্থবছর থেকে সব করদাতাকে অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে হবে।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘জিরো রিটার্ন’ দাখিলবিষয়ক কতিপয় ভ্রান্ত ধারণাপ্রসূত পোস্ট জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নজরে এসেছে। এসব পোস্টে রিটার্ন পূরণের সবকয়টি ঘর ‘শূন্য’ হিসেবে পূরণ করে রিটার্ন দাখিল করা যায় মর্মে প্রচার করা হচ্ছে। এসব ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী হয়ে কোনো কোনো করদাতা তাদের আয়কর রিটার্নে আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়ের বিষয়ে অসত্য ঘোষণা প্রদান করে আসছেন মর্মে জানা যায়।’

জিরো রিটার্ন প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আয়কর আইন, ২০২৩ অনুসারে ‘জিরো রিটার্ন’ নামে কোনো রিটার্ন দাখিলের বিধান নেই। করদাতার প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন না করে এর কোনো একটি শূন্য অথবা সব তথ্য শূন্য হিসেবে প্রদর্শন করা সম্পূর্ণ বে-আইনি এবং ফৌজদারি অপরাধ। আয়কর রিটার্নে আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায়-সম্পর্কিত সঠিক তথ্য প্রদর্শন না করে মিথ্যা বা অসত্য তথ্য প্রদান করলে ‘আয়কর আইন, ২০২৩’-এর ধারা ৩১২ ও ৩১৩ অনুসারে করদাতাকে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড প্রদানের বিধান রয়েছে।’

বিষয়টি আরও পরিষ্কার করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘করদাতার প্রকৃত আয়ের পরিমাণ আইনানুযায়ী করযোগ্য না হলে তাকে কোনো কর পরিশোধ করতে হবে না। তবে কর প্রদেয় না হলেও সঠিক তথ্য-উপাত্ত প্রদর্শন না করে শূন্য আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় দেখিয়ে শূন্য বা জিরো রিটার্ন দাখিল করার কোনো সুযোগ আয়কর আইনে নেই।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সব করদাতা দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে আয়কর রিটার্নে প্রকৃত আয়, ব্যয়, সম্পদ ও দায় প্রদর্শন করে দেশের উন্নয়নে গর্বিত অংশীদার হবেন। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত প্রতারণামূলক জিরো রিটার্নের ফাঁদে পা না দিয়ে নিজেকে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড থেকে সুরক্ষিত রাখবেন।’

প্রতিবছর ১ জুলাই থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ব্যক্তিশ্রেণির করদাতারা বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দেন। সেখানে সারা বছরের আয়-ব্যয়ের তথ্য দিতে হয়।