শেয়ার বিজ ডেস্ক : ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে ফ্রান্স স্বীকৃতি দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। আর তার এই ঘোষণার কড়া সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিরাপত্তা-বিষয়ক উপদেষ্টা মার্কো রুবিও।
গতকাল শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় রুবিও বলেছেন, ‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করার যে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন, তা আমরা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। পুরোপুরি বেপরোয়া এই সিদ্ধান্ত হামাসের প্রোপাগান্ডাকে সহায়তা করবে এবং সেখানে শান্তিস্থাপন প্রক্রিয়াকে আরও পিছিয়ে দেবে। গত ৭ অক্টোবর যারা হামাসের হামলার শিকার হয়েছিলেন, ম্যাখোঁর ঘোষণা তাদের প্রতি চপোটাঘাত।’
গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ম্যাখোঁ ঘোষণা দেন, আগামী সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে ফ্রান্স। পরে এক এক্সবার্তাতেও বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি।
জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের মধ্যে ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়েই আছে। যদি ফ্রান্স ম্যাখোঁর ঘোষণা অনুযায়ী পদক্ষেপ দেয়, সেক্ষেত্রে প্রথম নিরাপত্তা পরিষদের কোনো স্থায়ী সদস্যের স্বীকৃতি পাবে ফিলিস্তিন এবং এর জেরে স্বাভাবিকভাবেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের দাবি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে।
গত জুনের মাঝামাঝি নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন ইস্যুতে একটি সম্মেলন হয়েছিল। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ এবং সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান যৌথভাবে সেই সম্মেলনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন।
বর্তমানে জাতিসংঘের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৪০টিরও বেশি দেশ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে। স্পেন, আয়ারল্যান্ডসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশও তাদের মধ্যে রয়েছে।
এদিকে ম্যাখোঁর এই ঘোষণার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, এটি ‘সন্ত্রাসকে পুরস্কৃত’ করার শামিল এবং ইসরায়েলের অস্তিত্বের জন্য হুমকি। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
ম্যাখোঁর ঘোষণার কিছুক্ষণের মধ্যেই এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, এই সিদ্ধান্তে গাজার মতো আরেকটি ইরান-সমর্থিত সন্ত্রাসী শক্তি গড়ে ওঠার ঝুঁকি রয়েছে। যারা ইসরায়েলের পাশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চায় না, বরং আমাদের ধ্বংস করতে চায়।’
এদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা হুসেইন আল-শেখ ফরাসি সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এটি আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার প্রমাণ এবং ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ার অধিকারে প্রতি ফ্রান্সের সমর্থন দেখিয়ে দিচ্ছে।
হামাসও ফরাসি পদক্ষেপকে ইতিবাচক বলে উল্লেখ করেছে। এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি জানায়, এটি নিপীড়িত ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য অধিকার ও স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের দাবিকে সমর্থন করে। একইসঙ্গে তারা ইউরোপের অন্য দেশগুলোকে ফ্রান্সের পথ অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছে।

Discussion about this post