শেয়ার বিজ ডেস্ক : যুক্তরাজ্য দুর্বল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও শ্রমশক্তির সংকট থেকে উদ্ভূত এক তীব্র চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াইওমিং অঙ্গরাজ্যের জ্যাকসন হোল সামিটে শীর্ষ নীতিনির্ধারকদের সামনে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ সতর্কবার্তা দেন। খবর: বিবিসি।
বেইলি বলেন, মহামারির পর থেকে যুক্তরাজ্যে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ কমেছে। দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা এবং তরুণদের মধ্যে কর্মসংস্থানে উল্লেখযোগ্য হ্রাস এর অন্যতম কারণ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে জনসংখ্যার বার্ধক্য, যা আগামী কয়েক দশক ধরে অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করবে।
বার্ধক্যের প্রবণতা নিকট ভবিষ্যতে পাল্টাবে না, বলেন বেইলি। তার হিসাব অনুযায়ী, ২১২১ সালে যুক্তরাজ্যের প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর প্রায় ৪০ শতাংশ হবে ৬৪ বছরের ওপরে।
ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের প্রধান বলেন, এখন শুধু বেকারত্ব নয়, বরং শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার বিশ্লেষণে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। কভিড-পূর্ব সময়ের তুলনায় বর্তমানে ১৬ থেকে ৬৪ বছর বয়সীদের অংশগ্রহণ কম, যা যুক্তরাজ্যকে অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায় পিছিয়ে দিয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা কর্মসংস্থানে অনীহার বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
ডেটার সীমাবদ্ধতা থাকলেও বাস্তবতা হলো যুক্তরাজ্যের জন্য এটি এক দুঃখজনক চিত্র, মন্তব্য করেন বেইলি।
সরকার শ্রমশক্তির অংশগ্রহণ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রতিবন্ধী সুবিধার সংস্কার নিয়ে সংসদে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের নীতিগুলো মানুষকে কাজ থেকে নিরুৎসাহিত করছে।
২০২৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাজ্যের ২১ শতাংশ কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী (১৬ থেকে ৬৪ বছর) কর্মহীন বা সক্রিয়ভাবে কাজের সন্ধানে নেই। যদিও এ হার গত বছরের সর্বোচ্চ ২২ শতাংশ ২ শতাংশ থেকে কিছুটা কমেছে, তবে মহামারির আগের ২০ দশমিক ৩ শতাংশের তুলনায় এখনও বেশি।
শ্রমবাজার সংকোচন মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত চাপ তৈরি করছে। গত জুলাই মাসে যুক্তরাজ্যের মুদ্রাস্ফীতি ছিল তিন দশমিক ৮ শতাংশ, যা জি৭ দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ এবং দুই শতাংশ লক্ষ্যমাত্রায় ফেরানো কঠিন হতে পারে।
তবে অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকসের সর্বশেষ তথ্যে দেখা যায়, দ্বিতীয় প্রান্তিকে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময়ে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ, যা প্রথম প্রান্তিকের শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ থেকে কম হলেও অর্থনীতিবিদদের অনুমান শূন্য দশমিক ১ শতাংশের চেয়ে বেশি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, দুর্বল প্রবৃদ্ধি ও রাজস্ব ঘাটতি নিয়ে এখন বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন অর্থমন্ত্রী রেচেল রিভস—আসন্ন শরৎকালীন বাজেটে কীভাবে তিনি প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবেন এবং অর্থায়ন বাড়াবেন।

Discussion about this post