শেয়ার বিজ ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ব্রিস্টলের জাদুঘর থেকে ছয় শতাধিক শিল্পকর্ম চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া এসব শিল্পকর্ম যুক্তরাজ্যের রাজপরিবার, ব্রিটিশ সাম্রাজ্য এবং কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত। বৃহস্পতিবার ব্রিস্টল পুলিশের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিভিন্ন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম। চুরি হওয়া শিল্পকর্মগুলোর ‘ব্যাপক সাংস্কৃতিক মূল্য’ রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার চার সন্দেহভাজনের ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।
চুরি অবশ্য ঘটেছে বেশ আগে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর। এ ঘটনা প্রকাশ্যে আনতে কেন আড়াই মাস সময় লাগল, তা এখনও পরিষ্কার নয়। জাদুঘর কর্তৃপক্ষ কিংবা পুলিশ কেউই এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি।
ব্রিস্টল নগর কাউন্সিলের সংস্কৃতি এবং সৃষ্টিশীল শিল্প বিভাগের প্রধান ফিলিপ ওয়াকার জানিয়েছেন, চুরি হওয়া শিল্পকর্মের মধ্যে আছে মেডেল, ব্যাজ এবং পিন, নেকলেস, চুড়ি, আংটি ও নকশা খোদাই কারা হাতির দাঁত, রুপা ও ব্রোঞ্জের মূর্তি এবং গৃহসজ্জার সামগ্রী এবং ভূাতাত্ত্বিক বিভিন্ন নমুনা।
এএফপিকে ফিলিপ ওয়াকার বলেন, ‘চুরি যাওয়া শিল্পকর্মগুলো ব্রিটেনের এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের। ২০০ বছরের ব্রিটিশ সাম্রাজ্য, এই সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠায় যারা অবদান রেখেছে এবং এর দ্বারা যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসবের সঙ্গে সম্পর্কিত অমূল্য সব রেকর্ড ছিল এই শিল্পকর্মগুলো।’
এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তার এবং ব্রিস্টল পুলিশের জ্যেষ্ঠ কনস্টেবল ড্যান বার্গান এএফপিকে বলেন, ‘এটা আমাদের শহরের জন্য অনেক বড় ক্ষতি। যেসব শিল্পকর্ম চুরি হয়েছে, সেসবের মধ্যে অনেকগুলো দানের জিনিস ছিল, অর্থাৎ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সময় বিভিন্ন দেশের অভিজাতরা এসব শিল্পকর্ম দান করেছিলেন। এমন অনেক শিল্পকর্ম চুরি হয়েছে, যেগুলো আমাদের ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতীক।’
‘আমরা এখন পর্যন্ত এই চুরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চারজন সন্দেহভাজন সম্পর্কে তথ্য পেয়েছি। চার সন্দেহভাজনের ছবিও প্রকাশ করেছে পুলিশ। আমরা আশা করছি, সন্দেহভাজনদের আটক করতে জনগণ আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করবেন,’ এএফপিকে বলেন ড্যান বার্গান।
ব্রিস্টল শহরের ইতিহাস আটলান্টিক দাসবাণিজ্যের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। ১৮০৭ সালে দাস বাণিজ্য নিষিদ্ধ হওয়ার আগে এখানকার জাহাজ কমপক্ষে পাঁচ লাখ আফ্রিকানকে জোর করে দাস হিসেবে আমেরিকার দিকে নিয়ে গিয়েছিল। সেই ভয়ংকর বাণিজ্যের অর্থই শহরের এখনো টিকে থাকা জর্জিয়ান স্থাপত্যের অনেক অংশে বিনিয়োগ হয়েছিল।
মিউজিয়ামের বড় সংগ্রহে রয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের সামগ্রী, আফ্রিকার ঐতিহাসিক পোশাক, ছবি, চলচ্চিত্র, ব্যক্তিগত কাগজপত্র এবং অডিও রেকর্ডিং, যেগুলো মিউজিয়ামের মতে, ‘ইতিহাসের কঠিন ও বিতর্কিত একসময়কার বিভিন্ন মানুষের জীবন ও পরিবেশ সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়।’ সূত্র: এএফপি
প্রিন্ট করুন











Discussion about this post