শেয়ার বিজ ডেস্ক : ভেনেজুয়েলা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোকে সরাসরি হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি দাবি করেছেন, ভেনেজুয়েলার কারাগার ও মানসিক হাসপাতালে থাকা হাজারো অপরাধী ও মানসিক রোগীকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে। এই অভিবাসীদের তিনি ‘দানব’ বলে আখ্যায়িত করেন। খবর: রয়টার্স।
ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘এই মানুষদের যদি দ্রুত ফেরত না নেয়, তাহলে ভেনেজুয়েলাকে চরম মূল্য দিতে হবে।’ তবে তিনি এসব দাবি প্রমাণে কোনো পরিসংখ্যান বা তথ্য তুলে ধরেননি।
এদিকে ক্যারিবীয় সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন এবং মাদকবাহী সন্দেহে নৌযানে হামলার ঘটনায় ভেনেজুয়েলা ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। দেশটি বলছে, যুক্তরাষ্ট্র সেখানে মূলত এক ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে।
গত শুক্রবার মার্কিন বাহিনী ভেনেজুয়েলার একটি সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকায় হামলা চালায়। এতে তিনজন নিহত হন। এর পরদিনই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ওই অভিযানের বিষয়টি স্বীকার করেন।
ভেনেজুয়েলার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভøাদিমির পাদ্রিনো লোপেজ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কোনো প্রকার আত্মরক্ষার সুযোগ না দিয়েই ভেনেজুয়েলার নাগরিকদের হত্যা করছে। এটা সরাসরি যুদ্ধ। তিনি জাতিসংঘের কাছে এই হামলা তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করছে, তারা শুধু মাদকবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে ক্যারিবীয় সাগরে তারা এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, আটটি যুদ্ধজাহাজ ও প্রায় সাড়ে চার হাজার সেনা মোতায়েন করেছে।
তবে আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক জলসীমায় বেসামরিক নৌযানে সরাসরি হামলার বৈধতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন উঠছে। কারণ এসব হামলার আগে যথাযথ প্রমাণ বা বিচারিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি।
ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো ইতোমধ্যে দেশজুড়ে প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা জোরদার করেছেন। লা অর্চিলা দ্বীপে তিনি তিন দিনব্যাপী সামরিক মহড়া চালিয়েছেন। জনগণকে অস্ত্র প্রশিক্ষণে অংশ নিতে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় আমাদের সরকারকে উৎখাত করতে।
আমরা সেটা হতে দেব না।
ভেনেজুয়েলায় এখন বেসামরিক নাগরিকদেরও অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট মাদুরো বলেছেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় জনগণই হবে আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিস্থিতি দ্রুতই আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি বাড়ছে, অন্যদিকে ভেনেজুয়েলা সরকার প্রতিরোধের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে প্রশ্ন উঠছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ভেনেজুয়েলা কি সরাসরি যুদ্ধের পথে হাঁটছে?
যদিও এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি, তবে বাস্তব পরিস্থিতি বলছে, দুই দেশের মধ্যে যেকোনো সময় সংঘর্ষের সূত্রপাত হতে পারে।

Discussion about this post