Print Date & Time : 3 July 2025 Thursday 8:46 pm

‘রিপিট ক্যাডারে’ অসন্তোষ, শূন্য পদে সুযোগ চান নন-ক্যাডাররা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ৪৪তম বিসিএসে চূড়ান্ত সুপারিশপ্রাপ্তদের মধ্য থেকে ‘রিপিট ক্যাডারে’ ফের সুপারিশ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের দাবি, যেসব প্রার্থী ইতোমধ্যে ৪৩তম বিসিএসে ক্যাডার পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে চাকরিতে আছেন, তাঁদের একই ক্যাডারে পুনরায় নিয়োগ সুপারিশ করা ‘অযৌক্তিক’। এটি অপেক্ষমাণ নন-ক্যাডারদের জন্য বৈষম্যমূলক বলেও মনে করছেন তারা।

চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, ৪৪তম বিসিএসে প্রায় পাঁচ শতাধিক পদে রিপিট ক্যাডারে সুপারিশ করা হয়েছে। এর ফলে বহু পদ শূন্য থাকার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অথচ অনেক নন-ক্যাডার প্রার্থী এখনও একটি বিসিএসেও ক্যাডার পদে সুযোগ পাননি। এতে করে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় প্রকৃত প্রতিযোগিতার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন তাঁরা।

৪৪তম বিসিএসে মোট ১ হাজার ৭১০টি ক্যাডার পদের মধ্যে এক হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রশাসন, পুলিশ, কাস্টমস, শিক্ষা ক্যাডারসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখা গেছে, বেশ কিছু প্রার্থী ৪৩তম বিসিএসে যে ক্যাডার পেয়েছিলেন, ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছেন। এর ফলে অনেক পদ শূন্যই থেকে যাবে।

যদিও পাবলিক সার্ভিস কমিশন বা পিএসসি বলছে, প্রার্থীদের পছন্দক্রম এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী সুপারিশ করা হয়েছে। ফল প্রকাশের পূর্বে কে কোন ক্যাডারে চাকরিরত আছেন সে বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য থাকে না। যার ফলে এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া যায়।

রিপিট ক্যাডারের বিষয়ে জানতে পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) মাসুমা আফরীন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমান বলেন, ‘৪৩তম বিসিএসে কে কোন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে চাকরি করছেন, সে তথ্য আমাদের কাছে থাকে না। এমনকি প্রার্থীরা কোন ক্যাডারে সুপারিশ চান না, সে বিষয়েও কেউ আবেদন করেন না। ফলে এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ পিএসসির হাতে থাকে না।’

পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, ৪৪তম বিসিএসে মোট ১ হাজার ৭১০টি ক্যাডার পদের মধ্যে এক হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রশাসন, পুলিশ, কাস্টমস, শিক্ষা ক্যাডারসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখা গেছে, বেশ কিছু প্রার্থী ৪৩তম বিসিএসে যে ক্যাডার পেয়েছিলেন, ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছেন। এর ফলে অনেক পদ শূন্যই থেকে যাবে। পদগুলোতে নন-ক্যাডার থেকে নিয়োগ সুপারিশের দাবি জানিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা।

নন-ক্যাডারদের পদে অপেক্ষমাণ থাকা চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, শূন্য হতে যাওয়া ক্যাডার পদগুলোতে অপেক্ষমাণ মেধাবী প্রার্থীদের মধ্য থেকে নিয়োগের সুযোগ থাকা উচিত, যাতে সামগ্রিকভাবে প্রশাসনে নতুন দক্ষ জনবল যুক্ত হয়। তারা এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মো. ফরহাদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘একজন প্রার্থী একবার ক্যাডার পেলে সেটিই চূড়ান্ত হওয়া উচিত। নতুন বিসিএসে তাঁকে একই ক্যাডারে সুযোগ দিলে আমাদের মতো অপেক্ষমাণদের জীবন থমকে যায়।’ তাঁর মতে, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উচিত ছিল ইতোমধ্যে চাকরিতে কর্মরতদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে নতুনদের অগ্রাধিকার দেওয়া।

রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ইভান বলেন, ‘রিপিট ক্যাডার’ প্রথা বাতিল কর দরকার। ক্যাডার পদে নিয়োগ পাওয়া ব্যক্তিদের তথ্য পিএসসিতে থাকা উচিত। যেন একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশ বন্ধ হয়। রিপিট ক্যাডার বাদ দিলে অপেক্ষমাণদের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।