নিজস্ব প্রতিবেদক : লেনদেন খরা কাটছে না দেশের পুঁজিবাজারে। লেনদেন, বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ও টাকার পরিমাণ কমছে। সপ্তাহে একদিন কিছুটা উন্নতি হলে পরের চার দিন টানা দরপতন হচ্ছে। এমন অবস্থা গত নভেম্বর মাসজুড়েই ছিল পুঁজিবাজারে। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে গতকাল সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। আগের কার্যদিবসের তুলনায় গতকাল ডিএসইতে লেনদেন কিছুটা কমেছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৬৪ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৯১৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া ডিএসইর শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ১৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৯ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯৬ পয়েন্টে নেমেছে। লেনদেনেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় কিছুটা কমেছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৮৮টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৩২২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ২৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটেগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরির ২১৩টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১১টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৮৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর। একইভাবে ‘বি’ ক্যাটেগরির ৭৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৬১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৫টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
‘জেড’ ক্যাটেগরির ৯৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৭৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
এদিকে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে বেশির ভাগ ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৫টি ফান্ডের মধ্যে একটি ফান্ডের ইউনিট ২টির দর বেড়েছে, বিপরীতে ২৩টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১০টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ১৫ কোটি ২৬ লাখ ৪৮ হাজার ২০৪টি শেয়ার ও ইউনিট এক লাখ ৫৯ হাজার ৮৬৪ বার হাতবদল হয়েছে। এরই জেরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়ায় ৪১৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪৯২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার। কোম্পানিটির ২২ কোটি ৪২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকার। ১৩ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑআনোয়ার গ্যালভানাইজিং, ইনটেক, রহিমা ফুড, একমি পেস্টিসাইজ, সোনালী পেপার, মুন্নু ফেব্রিক্স এবং বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১২৪ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৮৫৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর সিএসসিএক্স ৭৩ পয়েন্ট কমে ৮ হাজার ৫৩৭ পয়েন্টে নেমেছে। সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৮২টি ফান্ড ও কোম্পানির মধ্যে ৪০টির দর বেড়েছে, ১১৩টির কমেছে এবং ১১টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ২৯ লাখ টাকার।
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচন ঘনিয়ে আসা এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চাপ ও তারল্য সংকটের প্রভাবে বিনিয়োগকারীরা নতুন বিনিয়োগে সতর্ক অবস্থান নিচ্ছেন। ফলে টানা কয়েক কার্যদিবস ধরে বাজারে পতনের ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে।
প্রিন্ট করুন








Discussion about this post