নিজস্ব প্রতিবেদক : শহিদ মিনার আমাদের প্রতিরোধ ও বিজয়ের প্রতীক। এখান থেকেই শুরু করেছিলাম এবং এখানে এসেই আমরা বিজয় উদযাপন করতে পেরেছিলাম বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শেষ পর্যায়ে শিক্ষক, সমাজকর্মী ও সংস্কৃতি কর্মীরা রাজপথে নেমে কারফিউ ভেঙে শহিদ মিনারে প্রোগ্রাম করেন, যা আমাদের ব্যাপকভাবে অনুপ্রাণিত করে। সবদিক বিবেচনায় শহিদ মিনার আমাদের প্রতিরোধ ও বিজয়ের অনুষঙ্গ। এখান থেকেই ৩ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে এক দফা ঘোষিত হয়েছিল।’
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জুলাই পুনর্জাগরণ র্যালি শেষে গতকাল শনিবার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে তিনি এসব কথা বলেন। র্যালিটি ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন চত্বর থেকে শুরু হয়ে কেন্দ ীয় শহিদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
তথ?্য উপদেষ্টা বলেন, ‘গত বছরের অভ্যুত্থানে প্রায় দুই হাজার মানুষ শহিদ হন; ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ আহত হন। এই আত্মত্যাগ স্মরণেই আমাদের কার্যক্রম। যত দিন আমরা শহিদদের স্মরণে রাখব, আহতদের মর্মপীড়া আমরা যত দিন অনুভব করব, তত দিন আমরা নতুন বাংলাদেশ গঠনের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকব।’
তথ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, শহিদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে যেহেতু একটা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি, বাংলাদেশকে নতুনভাবে গড়ার একটা সুযোগ পেয়েছি, সেই সুযোগটা আমাদের কাজে লাগাতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা অনেকগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম; যার একটি বড় অংশ বাস্তবায়নের পথে এগিয়েছে। অনেক কিছু পরিবর্তিত হয়েছে। হয়তো বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন এক বছরে সম্ভব হয়নি। তবে আমাদের চেষ্টা ছিল, এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
মাহফুজ আলম বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার কারণে অনেকে ন্যায্য অধিকার পাননি, বৈষম্যের শিকার হয়েছিলেন, এখন ১৬ বছর পর তারা সেই অধিকার ও ন্যায্যতার দেখা পেয়েছেন। বৈষম্যহীনতার দেখা পেয়েছেন।’
২০২৪-এর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘১৭ জুলাই গায়েবানা জানাজায় হামলার পর আমরা আর ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারিনি। ক্যাম্পাস থেকে আন্দোলন তখন ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে, বিশেষ করে ঢাকার প্রবেশপথের অন্তত আটটি পয়েন্টে তুমুল প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়েছিল। মানুষ দলমত-নির্বিশেষে অংশগ্রহণ করে, অসংখ্য মানুষ প্রাণ দিয়েছিল এই আন্দোলনে।’
তথ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান একটা পরিবর্তনের শুরু মাত্র। কিন্তু এক বছর-দুই বছর অথবা একটা সরকার বা দুটো সরকারের এটা বিষয় নয়। সরকার আসবে-যাবে, কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থানের কারণে পুরোনো ব্যবস্থা ও পুরোনো বন্দোবস্তে ছেদ পড়েছে। আমরা একটা পর্ব পেরিয়ে নতুন পর্বে রওনা দিয়েছি। আমি মনে করি, এই পর্বে সব গণতান্ত্রিক ও বহুমাত্রিক প্রকাশ এক বা দুই বছরে দেখা যাবে না। আমি মনে করি, আমাদের যেই প্রজন্ম এ গণতন্ত্রের অভিযাত্রা সূচনা করেছে, তাদের যদি দেশের সকল সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্মরণ রাখবে, যখন জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের অবিরত চেষ্টা চালিয়ে যাবে, আমরা আশা রাখি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে রূপান্তরিত হবে।’

Discussion about this post