শেয়ার বিজ ডেস্ক : আসন্ন শীতের চাহিদা মেটানো নিয়ে নিরাপত্তা শঙ্কায় পড়েছে জার্মানি। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত সোমবার পর্যন্ত দেশটির গ্যাস মজুতের পরিমাণ ছিল মাত্র ৬৭ শতাংশ, যা বিগত বছরগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। খবর: আনদোলু।
গত শুক্রবার আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিরোধী দল গ্রিন পার্টির নেতা মাইকেল কেলনার জার্মানির গ্যাস মজুতকে ‘ঐতিহাসিকভাবে নিম্ন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম এআরডিকে বলেন, ‘আমি আতঙ্ক ছড়াতে চাই না, তবে এবারের শীত যদি খুব তীব্র হয়, তবে গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থা নিরাপদ থাকবে কি না, তা নিয়ে আমার যথেষ্ট উদ্বেগ রয়েছে।’
জার্মানির জ্বালানি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বুন্দেসনেটজ এজেন্টুরের তথ্যমতে, মজুতের এই মাত্রা বিগত বছরগুলোর তুলনায় আশঙ্কাজনকভাবে কম। সংস্থাটি জানায়, ২০২২ সালের একই সময়ে দেশটিতে গ্যাস মজুত ছিল ৭৫ শতাংশ, ২০২৩ সালে ৯০ শতাংশ এবং ২০২৪ সালে প্রায় ৯২ শতাংশ।
শুধু তাই নয়, প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায়ও গ্যাস মজুতে বেশ পিছিয়ে রয়েছে জার্মানি। যেখানে ফ্রান্স ও পোল্যান্ড তাদের মজুত সক্ষমতার প্রায় ৮০ শতাংশ পূর্ণ করেছে, সেখানে অস্ট্রিয়া ৭৭ শতাংশ এবং বেলজিয়াম ৯২ শতাংশ মজুত করতে সক্ষম হয়েছে।
তবে এমন উদ্বেগজনক পরিস্থিতির মধ্যেও দেশটির অর্থনীতি ও জ্বালানি মন্ত্রণালয় বিষয়টিকে গুরুতর সংকট হিসাবে দেখছে না। মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, বর্তমানে চারটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল চালু রয়েছে, যা বছরজুড়ে গ্যাস আমদানির জন্য একটি অত্যন্ত নমনীয় ব্যবস্থা হিসাবে কাজ করছে। এর ফলে গ্যাস মজুতের ওপর নির্ভরতা আগের চেয়ে কমেছে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগে জার্মানি তার মোট প্রাকৃতিক গ্যাসের প্রায় ৫৫ শতাংশ এবং অপরিশোধিত তেলের ৩৫ শতাংশ রাশিয়া থেকে আমদানি করত। যুদ্ধ ও পরবর্তী সময়ে নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনে নাশকতামূলক হামলার পর জার্মানি ধীরে ধীরে রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনে।
বর্তমানে জার্মানি মূলত নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস ও বেলজিয়াম থেকে গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছে। বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডসের বন্দর দিয়ে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করে পাইপলাইনের মাধ্যমে তা জার্মানিতে পৌঁছে দেয়া হয়। তবে এই বিকল্প সরবরাহ ব্যবস্থাগুলো আগের তুলনায় অনেক বেশি ব্যয়বহুল।

Discussion about this post