নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের উপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ কার্যকর করার সময়সীমা আরও তিন সপ্তাহ পিছিয়ে দেওয়ায় কিছুটা স্বস্তি বোধ করছে ঢাকা। এতে করে, বর্ধিত এই শুল্ক প্রত্যাহার বা কমাতে—চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য আলোচনায় বাড়তি সময় পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কাছে কোন কোন পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা চায়— তার তালিকাসহ প্রস্তাবিত চুক্তির এনেক্সার ডকুমেন্ট বাংলাদেশকে দেওয়ার কথা থাকলেও, গতকাল সোমবার বিকেল পর্যন্ত তা পাওয়া যায়নি বলে একাধিক সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
এছাড়া, প্রস্তাবিত চুক্তি নিয়ে চলমান আলোচনার অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তরের (ইউএসটিআর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ইউএসটিআরের পক্ষ থেকে তা স্থগিত করে বুধবার মিটিংয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়, যাতে সম্মতি দিয়েছে বাংলাদেশ।
”৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অনলাইনে মিটিং হবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান সভায় যোগ দেবেন। আমি ঢাকা থেকে অনলাইনে যুক্ত হব”- জানান বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
ইউএসটিআর এর সঙ্গে চলমান আলোচনায় সরাসরি অংশ নিতে বাণিজ্য সচিবকে যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। আজ সোমবার বাণিজ্য সচিবের যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার কথা থাকলেও— ইউএসটিআর থেকে চুক্তির ডকুমেন্ট না পাওয়ায় যেতে পারেননি তিনি।
এবিষয়ে সচিব বলেন, ‘৩ জুলাইয়ের মিটিংয়ে এই ডকুমেন্ট পাঠানোর বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে। তারা ডকুমেন্ট পাঠানোর পর দুই-একদিনের মধ্যে বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে আমি যুক্তরাষ্ট্রে যাব।’
মাহবুবুর রহমান বলেন, আমি ওখানে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র যদি আমাদের কাছে গাড়ির (রপ্তানির) ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা চায়, তাহলে সেখানে বসে তো আমরা কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারব না। কারণ, জাপানের সঙ্গে আমাদের অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) স্বাক্ষরের আলোচনা চলছে। সেখানে জাপান-ও তাদের গাড়ি রপ্তানির ওপর শুল্ক-মুক্ত সুবিধা চেয়েছিল, কিন্তু আমরা রাজী হইনি। তাই যুক্তরাষ্ট্র আমাদের কাছে কী প্রস্তাব দেবে, এবং তার প্রেক্ষিতে সরকারের কী সিদ্ধান্ত- সেটা নিয়েই যেতে হবে।
”যুক্তরাষ্ট্র এলডিসিগুলোর জন্য আলাদা ট্যারিফ নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছে। সে কারণেই হয়তো ডকুমেন্ট পাঠাতে দেরি হচ্ছে”- জানান তিনি।
গত ২ এপ্রিল বাংলাদেশের উপর ৩৭ শতাংশসহ বিভিন্ন দেশের উপর বিভিন্ন হারে রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ বা পাল্টা শুল্ক আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। পরে সকল দেশের ওপর ১০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক কার্যকর করে— অবশিষ্ট ট্যারিফ তিন মাসের জন্য স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র, যার মেয়াদ আগামী ৯ জুলাই শেষ হওয়ার কথা ছিল। এখন তা ১ আগস্ট থেকে কার্যকর করার ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।
এসএস//

Discussion about this post