নিজস্ব প্রতিবেদক : পাল্টা শুল্কহার কমানোর তৃতীয় দফার আলোচনা শুরুর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (টঝঞজ) কাছে ফের সময় চেয়েছে বাংলাদেশ। গত সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নতুন করে একটি ই-মেইল পাঠিয়ে আলোচনার সময় চেয়ে অনুরোধ জানিয়েছে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
তবে আগেই ইউএসটিআর জানিয়ে দিয়েছে, তারা বর্তমানে এতটাই ব্যস্ত যে আলোচনার জন্য সময় বের করা কঠিন। তাই যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে বাংলাদেশকে সময় নিশ্চিত করে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
এরই মধ্যে বাংলাদেশ আজ মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিজেরে চূড়ান্ত অবস্থানপত্র পাঠাতে পারে। এতে বাংলাদেশেরর সম্ভাব্য সমঝোতার বিষয়গুলো উল্লেখ থাকবে।
বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান জানান, তারা সময় চেয়েছেন এবং এখন ইউএসটিআরের সাড়া পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। আগেরবারও অল্প সময়ের নোটিশে আলোচনা হয়েছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ইউএসটিআর যে ট্রাম্প প্রশাসনের অধীন একটি কার্যকর সংস্থাÑএ কথাও তিনি উল্লেখ করেন।
অবস্থানপত্র চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে সোমবার বিকালে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করে। একই দিনে তারা ৬০টি দেশের ওপর এই ধরনের শুল্ক আরোপ করে। পরে ৯ এপ্রিল তা তিন মাসের জন্য স্থগিত করে যুক্তরাষ্ট্র।
এখন পর্যন্ত দুই দফা আনুষ্ঠানিক আলোচনা করেও যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্কহার কমাতে রাজি করাতে পারেনি বাংলাশে। সর্বশেষ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রী মুহাম্ম ইউনূসকে চিঠি দিয়ে জানান, শুল্কহার ৩৭ শতাংশের পরিবর্তে ৩৫ শতাংশ করা হবে। তবে এ ঘোষণা বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের মধ্যে হতাশা তৈরি করে। ব্যবসায়ীরা সরকারের প্রস্তুতির ঘাটতি নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
জুনের মাঝামাঝি বাংলাশে ও যুক্তরাষ্ট্র নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট (ঘউঅ) সই করে; যার ফলে আলোচনার কোনো তথ্য প্রকাশ করা যাচ্ছে না। এতে ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদের পর্যাপ্ত পরামর্শও পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানা গেছে।
এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে। গত রোববার যুক্তরাষ্ট্র থেকে বছরে ৭ লাখ টন গম আমদানির জন্য সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক প্রত্যাহারের দিকেও যাচ্ছে বাংলাদেশ।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দরকষাকষিতে বাংলাদেশ দক্ষ না হওয়ায় শুরু থেকেই লবিস্ট নিয়োগের দাবি উঠলেও সরকার গুরুত্ব দিচ্ছিল না। তবে শেষ দিকে এসে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করেছে।
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান জানান, আগামী ১০-১১ দিনের মধ্যে বড় কোনো অগ্রগতি না হলেও তারা লবিস্ট নিয়োগ করতে চান। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার রজা খোলা রাখতে হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, যি ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক কার্যকরের সময়সীমা বাড়ায়, তাহলে আলোচনার নতুন সুযোগ আসতে পারে। লবিস্ট নিয়োগে সাত দিন লাগতে পারে বলেও জানান তিনি।
এ সময় তিনি জানান, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) লবিস্ট নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিজিএমইএর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বিদেশি ক্রেতারাও সহানুভূতিশীল অবস্থানে থাকলেও প্রকাশ্যে কিছু বলছেন না বলেও উল্লেখ করেন বিজিএমইএ সভাপতি।