শাহ মো. জিয়াউদ্দিন : ট্রেড ইউনিয়ন হল শ্রমিকদের একটি সংগঠন। এই সংগঠনটি শ্রমিকের কাজের অবস্থা এবং মজুরিসহ কর্মসংস্থানের বিভিন্ন শর্তাবলি উন্নত করার জন্য সংগঠিত। ট্রেড ইউনিয়নের মূল উদ্দেশ্য হলো: ১. কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করা। ২. শ্রমিকদের মজুরি এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা। ৩. কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ উন্নত করা। ৪. শ্রমিকদের মধ্যে ঐক্য ও সংহতি বৃদ্ধি করা। ৫. শ্রমিকদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা। ট্রেড ইউনিয়ন শ্রমিকদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম, যা তাদের অধিকার আদায়ে এবং কাজের পরিবেশ উন্নত করার কাজটি করে থাকে।
যুক্তরাজ্যে একটি জাতীয় সাধারণ ইউনিয়ন গঠনের প্রথম প্রচেষ্টা হয় ১৮২০ এবং ৩০ এর দশকে। ১৮৩০ সালে জন ডোহার্টি ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য প্রোটেকশন অব লেবার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। অ্যাসোসিয়েশনটি দ্রুত প্রায় ১৫০টি ইউনিয়নকে তালিকাভুক্ত করে, যার মধ্যে বেশির ভাগই টেক্সটাইল সম্পর্কিত ইউনিয়ন ছিল। তবে মেকানিক, কামার এবং অন্যান্য ইউনিয়নও ছিল। এক বছরের মধ্যে ল্যাঙ্কাশায়ার, চেশায়ার, ডার্বিশায়ার, নটিংহ্যামশায়ার এবং লিসেস্টারশায়রের পাঁচটি কাউন্টিতে এর কার্যক্রম ছড়িয়ে পরে। সদস্য সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১০ থেকে ২০ হাজার। মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং বৈধতা প্রতিষ্ঠার জন্য, তারা সাপ্তাহিক ভয়েস অব দ্য পিপল প্রকাশনা শুরু করে, যার ঘোষিত উদ্দেশ্য ছিল শ্রমিক সম্প্রদায়ের উৎপাদনশীল শ্রেণিগুলোকে ইউনিয়নের একটি সাধারণ বন্ধনে একত্রিত করা।”
১৮৫০-এর দশক থেকে স্থায়ী ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠিত হয়। লন্ডন ট্রেডস কাউন্সিল ১৮৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, যা শেফিল্ড আউটরেজেস ১৮৬৮ সালে ট্রেডস ইউনিয়ন কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার জন্য উৎসাহিত করেছিল। এটাই ছিল প্রথম দীর্ঘস্থায়ী জাতীয় ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র। ১৮৬৭ সালে রয়্যাল কমিশন অন ট্রেড ইউনিয়ন বিষয়ে একমত হওয়ার পর, ব্রিটিশ ট্রেড ইউনিয়নগুলি ১৮৭২ সালে বৈধতা পায়। এই সময়কালে অন্যান্য শিল্পোন্নত দেশগুলোতে, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি এবং ফ্রান্সে ট্রেড ইউনিয়নের বৃদ্ধি পায়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, প্রথম কার্যকর দেশব্যাপী শ্রমিক সংগঠন ছিল ১৮৬৯ সালে নাইটস অব লেবার যার পরিধি ১৮৮০ সালের পর বৃদ্ধি পায়। এক সময় মার্কিন আদালত এর বৈধতা দেয়। জার্মানিতে ১৮৯৭ সালে চ্যান্সেলর অটো ভন বিসমার্কের রক্ষণশীল সমাজতন্ত্রবিরোধী আইন বাতিলের পর জার্মান ট্রেড ইউনিয়নের মুক্ত সমিতি গঠিত হয়। ফ্রান্সে ১৮৮৪ সালের ওয়াল্ডেক রুশো আইনের পূর্ব পর্যন্ত শ্রমিক সংগঠন অবৈধ ছিল। ১৮৮৭ সালে ফেডারেশন দেস বোর্সেস ডু ট্রাভেল প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৮৯৫ সালে ফেডারেশন ন্যাশনাল ডেস সিন্ডিকেটস (ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়নস)-এর সঙ্গে একীভূত হয়ে জেনারেল কনফেডারেশন অব লেবার গঠন করে। বিংশ শতাব্দীতে কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট এবং যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশে, নিয়োগকর্তা কর্তৃক ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবী বা আইনগত স্বীকৃতি প্রদানের জন্য আইন পাস করা হয়। প্রাচীনতম বৈশ্বিক ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়ন। বিশ্বের বৃহত্তম ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন হলো ব্রাসেলস-ভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশন, যা ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। যার ১৫৬টি দেশ এবং অঞ্চলে প্রায় ৩০৯টি অনুমোদিত সংগঠন রয়েছে, যার সম্মিলিত সদস্য সংখ্যা ১৬৬ মিলিয়ন। নির্দিষ্ট শিল্প খাতে বা পেশাগত গোষ্ঠীতে সংগঠিত জাতীয় এবং আঞ্চলিক ট্রেড ইউনিয়নগুলোও বিশ্বব্যাপী ইউনিয়ন ফেডারেশন গঠন করে, যেমন টঘও ষেড়নধষ, ওহফঁংঃৎর অখখ, ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঞৎধহংঢ়ড়ৎঃ ডড়ৎশবৎং’ ঋবফবৎধঃরড়হ, ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ঋবফবৎধঃরড়হ ড়ভ ঔড়ঁৎহধষরংঃং, ওহঃবৎহধঃরড়হধষ অৎঃং ধহফ ঊহঃবৎঃধরহসবহঃ অষষরধহপব এবং চঁনষরপ ঝবৎারপবং ওহঃবৎহধঃরড়হধষ ।
মার্কসীয় তত্ত্বে ট্রেড ইউনিয়ন শ্রমিক শ্রেণির একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। এটি পুঁজিবাদের শোষণ থেকে শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য একটি সংঘবদ্ধ প্রচেষ্টা। মার্কস মনে করতেন, ট্রেড ইউনিয়নগুলো শ্রমিকদের মধ্যে শ্রেণিসচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং তাদের সংগঠিত করে পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত হতে উৎসাহিত করে। ট্রেড ইউনিয়নগুলো কেবল মজুরি বৃদ্ধির জন্য দর কষাকষি করে না, বরং এটি শ্রমিক শ্রেণির একটি রাজনৈতিক হাতিয়ার, যা সমাজতন্ত্রের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। মার্কসের তত্ত্ব অনুসারে ট্রেড ইউনিয়নগুলোর ভূমিকা হলো, ১. ট্রেড ইউনিয়নগুলো শ্রমিকদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করে তুলবে এবং তাদের মধ্যে একটি সম্মিলিত শ্রেণি বোধের চেতনা তৈরি হবে। ২. ট্রেড ইউনিয়নগুলো শ্রমিকদের একত্রিত করে একটি শক্তিশালী সংগঠন তৈরি করবে, যা মালিকপক্ষের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে রুখে দাঁড়াতে পারবে। ৩. ইউনিয়নগুলো শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, কাজের পরিবেশ এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য মালিকপক্ষের সঙ্গে দর কষাকষি ককরবে, যার ফলে হ্রাস হবে শ্রমিক শোষণ। ৪. মার্কস মনে করতেন, ট্রেড ইউনিয়নগুলো কেবল অর্থনৈতিক সংগ্রামেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং এটি শ্রমিক শ্রেণির রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবেও কাজ করবে এবং সমাজতন্ত্রের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ৫. ট্রেড ইউনিয়নগুলো শ্রমিকদের সংগঠিত করে এবং তাদের মধ্যে শ্রেণি সচেতনতা বৃদ্ধি করবে, যা হবে বৃহত্তর রাজনৈতিক সংগ্রামে অংশ নেয়ার প্রস্তুতের অংশ।
সংক্ষেপে, মার্কসীয় তত্ত্বে ট্রেড ইউনিয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার যা শ্রমিক শ্রেণির স্বার্থ রক্ষা, শোষণ হ্রাস এবং সমাজতন্ত্রের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটেও ট্রেড ইউনিয়ন একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন, যা শ্রমিকদের অধিকার ও স্বার্থ রক্ষার জন্য কাজ করে। ট্রেড ইউনিয়নগুলো শ্রমিকদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে, ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করতে, কাজের পরিবেশ উন্নত করতে এবং শ্রমিকদের অধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এটা ছিল মূল লক্ষ্য।
জাতিসংঘের মানবাধিকার ঘোষণাপত্রে ২৩-২৫ ধারায় শ্রমিকদের নিজেদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য প্রত্যেক শ্রমিককে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন এবং তাতে যোগদান করার অধিকার প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেক শ্রমিকের স্বাধীনভাবে চাকরি বেছে নেয়ার অধিকার, বৈষম্য ছাড়া সমান কাজের সমান বেতন পাওয়ার অধিকার দিয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানে ৩৮ অনুচ্ছেদে যে কোনো ব্যক্তিকে প্রদান করা হয়েছে সংগঠন করার স্বাধীনতা। আইএলও কনভেনশন ৮৭ ও ৯৮ এ শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছে। উল্লেখ্য, ১৯১৯ সালের ১১ এপ্রিল আইএলও প্রতিষ্ঠিত হয়। আইএলও এর সদস্য দেশ ১৮৭টি। বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের ২২ জুন আইএলও এর সদস্য হয়। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৭৫-২০৮ ধারায় শ্রমিকদের সংগঠন করার অধিকার এবং ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের পদ্ধতি বিষয়টি বর্ণনা করা আছে। শ্রমিক শোষক বলতে সাধারণত সেই ব্যক্তিদের বোঝায় যারা শ্রমিকদের শোষণ করে, তাদের ন্যায্য মজুরি বা অধিকার থেকে বঞ্চিত করে। শ্রমিক নেতা শব্দটি শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রামরত ব্যক্তিদের বোঝায়। শ্রমিকদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে শ্রমিক নেতারা সোচ্চার হওয়ার কথা ও শ্রমিকদরে অধিকার আদায়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা শ্রমিক নেতার দায়িত্ব। প্রকৃতার্থে বাস্তবে হচ্ছেটা কি?
বাংলাদেশে কতিপয় শ্রমিক নেতা আছেন তারা শ্রমিকদের স্বার্থের চেয়ে নিজেদের স্বার্থকে বেশি গুরুত্ব দেন। তারা মধ্যস্বত্ব ভোগী হয়ে শ্রমিকের শ্রমের মজুরি থেকে অর্থ হাতিয়ে নেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে শ্রমিক নেতা কর্তৃক শ্রমিক শোষণ একটি বড় সমস্যা। বর্তমানে মালিকের সঙ্গে মিশে শ্রমিকদের শোষণ করার কাজটা শ্রমিক নেতারাই করে থাকেন। শ্রমিকদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করার নামে এই নেতারা শ্রমিকদের ব্যবহার করে। সর্দার বা নেতারা শ্রমিকের শ্রমের মূল্য নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে বর্তমানে মধ্যস্বত্ব ভোগীর ভূমিকা পালন করছেন। যেমন, নির্মাণ শ্রমিকদের নেতা মালিকের সঙ্গে একজন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি নির্ধারণ করে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। ওই নেতা বা সর্দার দিন শেষে শ্রমিককে দেন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আর বাকি ১০০ টাকা নেতার। শ্রম শোষণ কি শুধু মালিকরাই করে এটা ঠিক নয়, বাংলাদেশে বিভিন্ন সেক্টরে গঠিত ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা শ্রমিক শোষণের বড় কাজটি করে থাকেন তাদের সহায়তায় মালিক শ্রমিক শোষণের সুযোগ পান। স্বাধীনতার পর থেকে আজ অবধি এই ধারাটা অব্যাহত আছে। বাংলাদেশের বেশির ভাগ ট্রেড ইউনিয়নের নেতা শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি থেকে আসা। যারা গায়ে খাটা শ্রমিক নন। অপরদিকে বাংলাদেশ বহু সংখ্যক ট্রেড ইউনিয়ন আছে যার নেতৃত্ব শ্রমজীবী মানুষ দেয় না। অপরদিকে স্বল্প সংখ্যক যে ট্রেড ইউনিয়ন আছে যার নেতৃত্ব দেন শ্রমিকরা। এরাই আবার নেতা হয়ে শ্রমিক শোষক হয়ে যান। এই বিষয়টা নির্মাণ ক্ষেত্রে বেশি ঘটছে। ছোট বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে বিভিন্ন রড কোম্পানি, সিমেন্ট কোম্পানি, ইটের ভাটা, বড় বড় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সংশ্লিষ্ট ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা ট্রিপস পেয়ে থাকেন। মে দিবস পালন করেন শ্রমিক নেতারা শিল্পপতিদের টাকা দিয়ে। ফলে প্রকৃত শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যের কোনো পরির্বতন আসছে না। ঢাকার তিনটি বড় বাস টার্মিনাল (মহাখালী, গাবতলী, সায়েদাবাদ) এর পরিবহন শ্রমিকের নেতা ছিলেন তিন খান। এই তিন খান নিয়ন্ত্রণ করতেন এক সময় সারা বাংলাদেশের পরিবহন শ্রমিকদের। তাদের কব্জায় থাক কিছু মাসলম্যান। এই মাসলম্যানদের দিয়ে তারা প্রকৃত শ্রমিকদের নেতৃত্বে আসতে দেননি। এই তিন খান পরিবহন সেক্টরের শ্রমিক নেতা হয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছেন। অপরদিকে বাসের হেলপারটি ভাগ্যের কোনো পরির্বতন হয়নি। হেলপারটিকে আজও আধপেটা খেয়ে বেঁচে থাকতে হচ্ছে; কারণ তার মজুরির কোনো কাঠামো নেই। সেই নেই চাকরি স্থায়িত্ব। বর্তমানে বিভিন্ন এনজিও কাজ করার বদৌলতে শ্রমিক নেতাদের ভাগ্যের ঘটছে পরির্বতন। কারণ এনজিও-গুলো শ্রমিক সচেতনতা নিয়ে কাজ করে। তাই তাদের কাজ করার স্বার্থে হাত করতে হয় শ্রমিক নেতাদের। এনজিও-গুলো শ্রমিক নেতাদের বিভিন্ন পদে পদাসিক্ত করে বেতন দিয়ে থাকেন। এই শ্রমিক নেতারা হলেন উচ্চ ধরনের বাটপাড়। বিভিন্ন বাম সংগঠনের সদস্য হিসেবে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী সদস্যর সংখ্যা খুবই কম পাওয়া যায়। কিছু বাম সংগঠনে কিছু শ্রমিক নেতা দেখা যায়, তবে এরাও ওই উচ্চ ধরনের বর্ণচোরা প্রতারকদের একটি অংশ।
বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সম্মেলনে যারা প্রতিনিধিত্ব করে থাকেন মূলত তারা কেউ খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ না। এরা শ্রমিকদের ঘাড়ে ভর করে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন। ফলে প্রকৃত শ্রমিকের ভাগ্যের কোনো পরির্বতন হয়নি।
যার পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, বাংলাদেশে প্রকৃত শ্রমিকদের নিয়ে কখনোই গড়ে উঠেনি ট্রেড ইউনিয়ন। তাই মার্কসীয় তত্ত্বের অনুসারে শ্রমিকদের স্বার্থ আদায়ের প্রকৃত সংগ্রামের রূপরেখা তৈরি করতে পারেননি এ দেশের বামপন্থি রাজনৈতিকরা।
উন্নয়ন কর্মী, মুক্ত লেখক
কাদিরগঞ্জ দরিখোরবোনা, রাজশাহী।