মীর কামরুজ্জামান মনি, যশোর : জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় কেউ মাঠের বাইরে থেকে খেলা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। যারা সত্যিকারের পরিবর্তন চান, তাদের মাঠে নামতেই হবে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) যশোর শহরের হোটেল ওরিয়নে জুলাই আন্দোলনের আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, “বিএনপি যেন সবকিছু নিজের মতো করে চালাতে পারে- এমনটা আর হতে দেয়া হবে না। খেলতে চাইলে প্লেয়ার হিসেবে মাঠে আসতে হবে, গ্যালারিতে বসে নির্দেশনা দিয়ে কিছু হবে না।”
তিনি অভিযোগ করেন, “জুলাই আন্দোলনসহ বিগত ১৬ বছরে যখন তৃণমূলের কর্মীরা রাজপথে জীবন বাজি রেখেছেন, তখন বিএনপির অনেক শীর্ষ নেতা ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে ব্যবসা ও বিলাসবহুল জীবনযাপন করে গেছেন। এটা কোনো রাজনৈতিক নৈতিকতার পরিচয় নয়। আমরা স্পষ্ট করে বলছি- তৃণমূলের ত্যাগ ও রক্তের সঙ্গে কোনো বেঈমানি বরদাস্ত করা হবে না।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে হাসনাত বলেন, “আমরা কোনোভাবেই নির্বাচন পিছিয়ে দিতে চাই না। কিন্তু সংস্কারবিরোধী একটি চক্র নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়। আমরা বলি- জুলাই সনদ, বিচার এবং নির্বাচন- সবকিছু একত্রে একটি প্যাকেজ আকারে বাস্তবায়ন করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশপন্থি নির্বাচন কমিশন, গণমাধ্যম এবং সরকার গঠনের মাধ্যমেই আমরা একটি সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্ম দিতে চাই। ব্যক্তিপূজার পুরনো ব্যবস্থাকে ভেঙে নতুন পথ গড়তে হবে।”
হাসনাত আব্দুল্লাহ ৩ আগস্টের আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আগামী ৫ আগস্টকে মিথ্যা মোড়কে ‘মব’ বলার ষড়যন্ত্র চলছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে সরকার বিরোধীদের জঙ্গি আখ্যা দিতে চাইছে। এ ধরনের অপরাজনীতি রুখে দিতে সবাইকে মাঠে থাকতে হবে।”
তিনি জানান, জুলাই আহতদের চিকিৎসা এখনো সঠিকভাবে হচ্ছে না। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, “জুলাই আন্দোলনের চেতনার সঙ্গে স্বাস্থ্য উপদেষ্টা খাপ খাওয়াতে পারছেন না। এনসিপি নিজে থেকেই আহতদের চিকিৎসায় ভূমিকা রাখবে।”
সভায় এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “জুলাই সনদ দ্রুত ঘোষণা করতে হবে এবং তা লিখিতভাবে সংবিধানে স্থান দিতে হবে। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে গণপরিষদ ভোট ছাড়া তা সম্ভব নয়। এ কারণে সংবিধানে সংশোধন জরুরি।”
মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এনসিপি নেতা তাসনিম জারা, নুসরাত তাবাসসুমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সভায় যশোরের ৪ শহীদ পরিবারের সদস্য ও ১৫ জন আহত জুলাই যোদ্ধা অংশগ্রহণ করেন।
আরআর/

Discussion about this post