নিজস্ব প্রতিবেদক : যুক্তরাজ্যে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর তিনটি কোম্পানির দায়িত্ব নিয়েছে আর্থিক সংস্থা গ্রান্ট থর্নটনের সহযোগী প্রতিষ্ঠান।
সংবাদমাধ্যম বিসনাউ গত শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই তিনটি কোম্পানির মোট সম্পদের পরিমাণ ১৪২ মিলিয়ন পাউন্ড। গত ২৯ জুলাই এগুলোর দায়িত্ব নেয় প্রশাসন সংস্থা।
সাধারণত কোনো কোম্পানি ঋণ পরিশোধ বা কার্যক্রম চালাতে ব্যর্থ হলে সেগুলো দেউলিয়ার পথে চলে যায়। তখন প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে এগুলো বাঁচানোর চেষ্টা করা হয়। সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের কোম্পানিগুলোতে দুরবস্থা তৈরি হওয়ায় এগুলো প্রশাসন সংস্থার অধীনে নেয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্যের আবাসন ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। দুর্নীতির দায়ে তাকে ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন অভিযুক্ত করেছে।
বিসনাউ জানিয়েছে, সাইফুজ্জামানের মালিকানাধীন জেটিএস প্রপার্টিস লিমিটেড, রুখমিলা প্রপার্টিস লিমিটেড এবং নিউ ভেঞ্চার্স (লন্ডন) লিমিটেডে গত ২৯ জুলাই প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। সাইফুজ্জামের যেসব কোম্পানি ইতোমধ্যে প্রশাসকের অধীনে গেছে, সেগুলোর সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হলো এ তিনটি। এগুলোর মধ্যে জেটিএসের সম্পদের পরিমাণ ৭৭ মিলিয়ন, যা অন্য দুটি কোম্পানির চেয়ে বেশি।
তথ্য অনুযায়ী, এ তিনটি ‘আবাসন কোম্পানির’ কাছে বিভিন্ন ব্যাংক ৭৮ মিলিয়ন পাউন্ড পাবে। এর মধ্যে সিঙ্গাপুরের বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান ডিবিএস সাইফুজ্জামানের জেটিএসের বিভিন্ন প্রপার্টির বিপরীতে ঋণ দিয়েছে। এর আগে চলতি বছরের শুরুতে সাইফুজ্জামানের আরও তিনটি কোম্পানিতে প্রশাসক নিয়োগের তথ্য জানিয়েছিল বিসনাউ। যেগুলোর মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ২৯ মিলিয়ন পাউন্ড। মূলত লন্ডনে থাকা ফ্ল্যাট দেখিয়ে এ ধরনের ঋণ নেয়া হয়। গত সপ্তাহে বিসনাউ জানিয়েছিল, চলতি বছরের শুরুতে সাইফুজ্জামানের যেসব কোম্পানিতে প্রশাসক বসানো হয় সেগুলোর সম্পদ বিক্রি করা শুরু করেছে গ্রান্ট থর্নটন।
সাবেক আওয়ামী এমপি ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান যুক্তরাজ্যে ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি সম্পদ কিনেছিলেন। অথচ মন্ত্রী হিসেবে তিনি নির্দিষ্ট বেতন পেতেন। দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের অভিযোগে যুক্তরাজ্যের জাতীয় অপরাধ সংস্থা সাইফুজ্জামানের ১৭০ মিলিয়ন পাউন্ডের সম্পদ জব্দ করেছে।
প্রসঙ্গত, সাবেক আওয়ামী এমপি ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান যুক্তরাজ্যে ৫০০ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি সম্পদ কিনেছিলেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে এ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে ৩৪৩টি অ্যাপার্টমেন্ট, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২২৮টি এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৯টি এপার্টমেন্টের তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের সম্পদের খোঁজে আরও অনুসন্ধানে তথ্য চাওয়া হয়েছে অন্যান্য দেশে।

Discussion about this post