নিজস্ব প্রতিবেদক :চট্টগ্রামে ইউসিবির চকবাজার ও পোর্ট শাখা থেকে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে ৩১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ঋণ তুলে আত্মসাতের অভিযোগে চারটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম কার্যালয়ে মামলাগুলো রেকর্ড হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপপরিচালক সুবেল আহমেদ।
এগুলোর মধ্যে দুটিতে আসামি করা হয়েছে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদকে। এছাড়া মামলাগুলোতে ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান, পরিচালক, ভাইস চেয়ারম্যানসহ ঋণ বিতরণ ও জালিয়াতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আসামি করা হয়েছে।
এজাহার অনুযায়ী, বশির আহমেদের প্রতিষ্ঠান বি অ্যান্ড বি ইলেকট্রনিক্সের সাবেক কর্মচারী মোস্তাফিজুর রহমান এবং আবুল কালাম নামের আরেক ব্যক্তি বিভিন্ন গ্রামের দরিদ্র কৃষক ও শ্রমিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি ও ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করতেন। তাদের তথ্য ব্যবহার করে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সহায়তায় ভুয়া প্রতিষ্ঠান গড়া হয়। এরপর ওইসব প্রতিষ্ঠানের নামে হিসাব খোলা ও ঋণ অনুমোদনের পর কোটি কোটি টাকা তুলে নেয়া হয়।
দুদকের উপপরিচালক মো. মশিউর রহমান বাদী হয়ে করা মামলায় বলা হয়, দরিদ্র কৃষক নুরুল বশরের তথ্য ব্যবহার করে ভুয়া প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা হয়। ইউসিবি পিএলসি চকবাজার শাখার কর্মকর্তারা ঋণ অনুমোদনের পর প্রতিষ্ঠানটির নামে ৮ কোটি টাকা তুলে বিভিন্ন হিসাবে স্থানান্তর করে আত্মসাৎ করেন। মামলায় বশির আহমেদ, আনিসুজ্জামান চৌধুরী, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদসহ বোর্ডের সাবেক সদস্য এবং শাখার ভিপি, অপারেশন ম্যানেজার ও ক্রেডিট কর্মকর্তারা আসামি।
উপসহকারী পরিচালক মো. রুবেল হোসেন বাদী হয়ে করা মামলায় উল্লেখ করা হয়, ইউসিবিএল পোর্ট শাখার কর্মকর্তারা কৃষক ফরিদুল আলমের তথ্য ব্যবহার করে আরেকটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। সেই প্রতিষ্ঠানের নামে অনুমোদিত ঋণের পুরো ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা বিভিন্ন ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক হিসাবে স্থানান্তর করে আত্মসাৎ করা হয়। বোর্ডের সাবেক পরিচালক, ভাইস চেয়ারম্যানসহ শাখার ভিপি ও আরও কয়েকজন কর্মকর্তা এ মামলার আসামি।
উপসহকারী পরিচালক সজীব আহমেদ বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় বলা হয়, মোহাম্মদ আয়ুব নামের একজন শ্রমিকের তথ্য ব্যবহার করে ভুয়া প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ অনুমোদনের পর ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা ওঠানো হয়। টাকাগুলো দ্রুত বিভিন্ন হিসাবে স্থানান্তর করা হয়। মামলায় বশির আহমেদসহ বোর্ডের সাবেক সদস্য এবং চকবাজার শাখার একাধিক কর্মকর্তা আসামি।
সহকারী পরিচালক মো. মাইনউদ্দীন বাদী হয়ে করা মামলায় বলা হয়, দরিদ্র কৃষক মো. ইউনুছের তথ্য দিয়ে আরেকটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয়। এই প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ অনুমোদনের পর ৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ধাপে ধাপে উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়। মামলায় বোর্ডের সাবেক পরিচালক, ভাইস চেয়ারম্যানসহ ২০ জনের বেশি কর্মকর্তার নাম আছেন।
প্রিন্ট করুন







Discussion about this post