শেয়ার বিজ ডেস্ক : সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে কাউকে ছাড় দেব না বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মাদ আবদুল মোমেন। জয়পুরহাটে শিল্পকলা একাডেমিতে এক গণশুনানিতে গতকাল সোমবার তিনি এ কথা বলেন।
দুদক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মাদ আবদুল মোমেন বলেন, প্রথমত এই সরকার দুর্নীতিকে কোথাও প্রশ্রয় দিচ্ছে না, যার বিরুদ্ধেই অভিযোগ হোক। ইতোমধ্যে আপনারা হয়তো শুনেছেন, আমাদের উপদেষ্টাদের কথাও কেউ কেউ বলেছেন। সেক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশনে যদি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে, আমরা কাউকেই ছাড় দেব না। আমরা প্রত্যেকের দুর্নীতি, যদি অভিযোগ থাকে, অভিযোগ যদি সুনির্দিষ্ট হয়, আমরা তদন্ত করে একটা একটা করে দেখব। আমরা আমাদের কার্যক্রম আপনাদের সহযোগিতায় সঠিকভাবে চালিয়ে যাব বলে বিশ্বাস করি।
ড. মোহাম্মাদ আবদুল মোমেন বলেন, সবার আগে নজর দিতে হবে দুর্নীতি দমন কমিশন অফিসের দিকে। আপনাদের আশপাশে যারা দুর্নীতি নিয়ে কাজ করছেনÑআমাদের দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, প্রথম কাজ হচ্ছে যেটা দেখাÑআমরা দুর্নীতিগ্রস্ত কিনা? এটা যদি সফলতার সঙ্গে দেখতে পারেন তারপর আপনারা নিজেরা কতটা সফল হবেন, সে পরীক্ষা করতে পারবেন। সেবা প্রদানকারীর সংখ্যা কিন্তু খুব কম, গ্রহীতার সংখ্যাই বেশি। কিন্তু সব ক্ষমতা আবার যারা সেবা প্রদানকারী তাদের হাতে। যারা চাইলে কাজটা সহজ করতে পারেন, চাইলে কাজটি কঠিন করতে পারেন। আমি শুধু এটা বলি না যে, সবটা চাইলেই এই মুহূর্তে করতে পারব, তা নয়। অনেক বিষয় আছে যার সঙ্গে মামলা-মোকদ্দমা জড়িত। দুর্নীতি দমন যে একটা কঠিন কাজ, সেটা গণশুনানিতে উঠে আসে। তিনি দেশের প্রথম দুর্নীতিমুক্ত জেলা হিসেবে জয়পুরহাটকে দেখার আশা বাদ ব্যক্ত করেন।
জেলা প্রশাসক আফরোজা আক্তার চৌধুরীর সঞ্চালনায় ও সভাপতিত্বে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ ও গণসচেতনতা) আক্তার হোসেন, দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় পরিচালক ফজলুল হক ও জয়পুরহাটের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে জয়পুরহাট জেলা সদরের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সেবা পেতে হয়রানি বা ঘুস, দুর্নীতির শিকার সেবাপ্রত্যাশী জনসাধারণ এবং সেবা প্রদানকারী সরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে গণশুনানি শুরু হয়।
অনুষ্ঠিত এ গণশুনানিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), জয়পুরহাটের জেনারেল হাসপাতাল, জেলা পরিষদ, জয়পুরহাট চিনিকল, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি, জয়পুরহাট থানা, পৌরসভা, ভূমি অফিস, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, সমাজসেবা অধিদপ্তর, ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মোট ৬৭টি অভিযোগে প্রকাশ্যে সেবাগ্রহীতা ও সেবাদাতাদের (দুপক্ষের) গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় সেবাগ্রহীতাদের অধিকাংশ অভিযোগ দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেয়া হয় এবং কয়েকটি অভিযোগ আমলে নিয়ে দুদক নিজে সেগুলো তদন্ত করবে বলে ঘোষণা দেন দুদক চেয়ারম্যান।
এ অনুষ্ঠানে জেলার সব সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান প্রধান ও জনপ্রতিনিধিসহ সুশীল সমাজের বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।