নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পুঁজিবাজারে ধারাবাহিকভাবে সূচকের গতিও বাড়ছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। তবে গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেন অনেকটাই কমেছে। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দরও কমেছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ২৮ দশমিক ০৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৩৯২ পয়েন্টে। তবে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৫ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট কমে এক হাজার ১৭২ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৩ দশমিক ২৯ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৮৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় অনেকটাই কমেছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৮টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৬১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৭১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৬৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটেগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরির ২২০টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১০৪টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৮৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৩২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটেগরির ৮২টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৪৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
‘জেড’ ক্যাটেগরির ৯৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৪০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও বেশির ভাগ ফান্ডের ইউনিটের দর বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র ১০টি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ৬টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২০টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৩ কোটি ৪৭ লাখ ৫৯ হাজার ৫৯৫টি শেয়ার ও ইউনিট দুই লাখ ৪৫ হাজার ৩০৮ বার হাতবদল হয়েছে। এরই জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৯৫১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৯৮৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মোট ২৪৯টি কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১১৫টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৯৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ারদর কমেছে। দিনশেষে ৩৫টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে গতকাল মোট ৫৬ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, ডলারের বিপরীতে টাকার শক্তিশালী অবস্থান, সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমা এবং বাজেটে কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপের কারণে পুঁজিবাজারে এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গতকাল পুঁজিবাজারের এই তেজিভাব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। আগামী দিনগুলোয় বাজারের এই ইতিবাচক ধারা বজায় থাকে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়। যদিও সূচক বাড়ার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। তবে এটি বাজারে বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং ইতিবাচক মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, আগামী দিনগুলোয়ও এ ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় থাকবে।

Discussion about this post