নুরুন্নাহার চৌধুরী কলি: পতনের ধাক্কা সামলে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে গতকাল সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেনও অনেকটাই বেড়েছে। এদিকে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দরও বেড়েছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৮২ দশমিক ০৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৯৭৬ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৫ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮১ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৩৬ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৭৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৬টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৭৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৭৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৪৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ২১৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১৭২ কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ২৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৭ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮৩টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৪৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ২৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
‘জেড’ ক্যাটাগরির ৯৭টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৫৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ২১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
একইসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের দরও বেড়েছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৩০টি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে দুটি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল চারটি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ২৮ কোটি ৫৮ হাজার ৯৩১টি শেয়ার ও ইউনিট ১ লাখ ৬৯ হাজার ২৬০ বার হাতবদল হয়েছে। এরই জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৫৭৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫০৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মোট ২২৮টি কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৫৪টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৪৮টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার দর কমেছে। দিনশেষে ২৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে গতকাল মোট ৪৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ২১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির ধীরে ধীরে উন্নতি বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করছে। বর্তমান প্রবণতা বজায় থাকলে বাজার আরও চাঙা হতে পারে। গতকাল পুঁজিবাজারের এই তেজিভাব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। আগামী দিনগুলোতে বাজারের এই ইতিবাচক ধারা বজায় থাকে কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। সূচক বাড়ার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে লেনদেনেরও পরিমাণ বেড়েছে। এটি বাজারে বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং ইতিবাচক মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, আগামী দিনগুলোতেও এই ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় থাকবে।

Discussion about this post