নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর মিটফোর্ডে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ সোহাগকে বীভৎসভাবে প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনা দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুবদলের সম্পৃক্ততা আছেÑএমন অভিযোগ তুলে ঘরে-বাইরে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে। এর মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে মুখ খুললেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এভাবে প্রকাশ্য হত্যাকাণ্ডের পরও কেন প্রধান অভিযুক্তকে সরকার গ্রেপ্তার করল না সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এসব ঘটনা সরকারের প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয়ে হচ্ছে কি না-সেটা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গতকাল শনিবার বিকালে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। জুলাই আন্দোলনে শহিদ পরিবারের সঙ্গে ছাত্রদল মতবিনিময় অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তারেক রহমান। জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্রদলের ১৪২ শহিদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় তিনি বলেন, ‘পুরান ঢাকায় যে ঘটনাটি ঘটেছে, আমরা খুব আশ্চর্যের সঙ্গে লক্ষ করেছি, স্ক্রিনে যাকে দেখেছি হত্যা করতে, তাকে কেন সরকার এখন পর্যন্ত অ্যারেস্ট করেনি? আমরা কি তবে ধরে নেব যে যারা বিভিন্নভাবে মব সৃষ্টি করে একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে, সেখানে সরকারের কোনো প্রচ্ছন্ন প্রশ্রয় আছে? প্রশাসনের কারও কারও কোনো প্রশ্রয় আছে?’
সভায় একজন শহিদ বাবার প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন, ‘দেশের গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র ছিল, আমরা স্বৈরাচারকে বিতাড়িত করেছি। কিন্তু আমরা বিজয় অর্জন করলেও ষড়যন্ত্র এখনও শেষ হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘আমি আজ থেকে ৮-৯ মাস আগে বলেছিলাম, অদৃশ্য শত্রু আছে। আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হচ্ছে সেই অদৃশ্য শত্রু। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে মানুষের গণতন্ত্র ও অধিকারের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল, ভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করেছিল, জনগণের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বারবার বলেছি, অন্যায়কারী যেই হোক আমরা প্রশ্রয় দেব না। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সরকার কেন ব্যর্থ হচ্ছে? এখানে যে শহিদের বাবা প্রশ্ন তুলেছেন তার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে আমরাও অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে একই প্রশ্ন করতে চাই।’
শহিদদের বিচারের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘গত ১৫-১৬ বছরে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের বহু নেতাকর্মী শহিদ হয়েছেন। বিএনপি ছাড়াও অনেক দলের নেতাকর্মী শহিদ হয়েছেন। এমনকি নিরপেক্ষ অনেক মানুষও শহিদ হয়েছেন দেশের মানুষের অধিকার রক্ষা করতে গিয়ে। আগামীতে বিএনপি দেশের মানুষের সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করতে পারলে এসব হত্যার বিচার সুষ্ঠুভাবে হবে। এ বিষয়ে সর্বোচ্চ উদ্যোগ নেবে বিএনপি।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল। সভাপতিত্ব করেন ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির।

Discussion about this post