শেয়ার বিজ ডেস্ক : দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে টমেটো আমদানি শুরু হয়েছে। চট্টগ্রামের বড় বাজারের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারতের নাসিক রাজ্য থেকে এসব টমেটো আমদানি করছেন। হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ বিভাগের উপসহকারী কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী গতকাল মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার ভারত থেকে টমেটো বোঝাই একটি ট্রাক হিলি বন্দরে প্রবেশের মধ্য দিয়ে টমেটো আমদানি কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিন ২৮ টন টমেটো আমদানি করা হয়েছে। প্রতি কেজি টমেটো আমদানি করতে শুল্কসহ খরচ গুনতে হচ্ছে ৬১ টাকা।’
আমদানিকারক এনামুল হক বলেন, দেশের বাজারে চাহিদা থাকায় ভারতের নাসিক রাজ্য থেকে এসব টমেটো আমদানি করা হচ্ছে। বন্দরে প্রতি কেজি টমেটো ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। চাহিদা থাকলে আরও বেশি পরিমাণ টমেটো আমদানি করা হবে।
হিলি কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন বলেন, হিলি বন্দর দিয়ে এক ট্রাকে ২৮ টন টমেটো আমদানি হয়েছে। আমদানিকৃত এসব টমেটো ৫০০ ডলারে শুল্কায়ন করা হচ্ছে। যেহেতু টমেটো কাঁচাপণ্য, তাই দ্রুত ছাড়করণে আমদানিকারককে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।
হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধের তথ্যমতে, গত ২০২২ সালের ৬ আগস্ট সবশেষ এই বন্দর দিয়ে টমেটো আমদানি করা হয়েছিল।
এর আগে গত জুন মাসে কাঁচামরিচ ও টমেটোর দাম সহনীয় পর্যায়ে আনতে কাঁচামরিচ ও টমেটো আমদানির অনুমতি দিয়েছিল কৃষি মন্ত্রণালয়। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছিল।
এতে বলা হয়, কাঁচামরিচ ও টমেটো আমদানির অনুমতি দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে কাঁচামরিচ আমদানির জন্য ৩০টি আইপি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যার পরিমাণ ১১ হাজার ৬০০ টন।
টমেটো আমদানির জন্য ৬৮টি আইপি অনুমোদন দেয়া হয়েছেÑজানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যার পরিমাণ ৫৫ হাজার ৬০০ টন।
অন্যদিকে বছরের শুরু থেকেই নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে পাথরসহ বিভিন্ন পণ্যের আমদানি কমেছে। একসময় ভারত ও ভুটান থেকে প্রতিদিন ২৫০-৩০০ ট্রাক বোল্ডার পাথর দেশে প্রবেশ করলেও বর্তমানে তা নেমে এসেছে ১৫০-২০০ ট্রাকে। কখনও আবার সংখ্যা আরও কমে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে আমদানি কমলেও রপ্তানির খাত খুলেছে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার।
প্রতিদিনই আলু, পাট ও গার্মেন্টস ঝুটসহ বিভিন্ন বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি হচ্ছে নেপালসহ একাধিক দেশে। বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের কোয়ারেন্টিন ইন্সপেক্টর উজ্জ্বল হোসেন জানান, ‘বর্তমানে নেপালে আলু ও পাটের চাহিদা দ্বিগুণ হওয়ায় রপ্তানি খাত থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে এ বন্দর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রতিদিনই বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হচ্ছে আলু, পাটসহ বিভিন্ন পণ্য।’
বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, গত রোববার একদিনেই নেপালে রপ্তানি হয়েছে ৫৯০ মেট্রিক টন পাট ও ৮৪ মেট্রিক টন আলু। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মোট ১৮ হাজার ৬৪৪ দশমিক ৬৯ মেট্রিক টন পাট এবং ২৪ হাজার ৮৪৩ মেট্রিক টন আলু রপ্তানি হয়েছে।
স্থানীয় অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আমদানি কমলেও কৃষিপণ্য রপ্তানিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে বাংলাবান্ধা। সঠিক পরিকল্পনা ও নীতিগত সহায়তা পাওয়া গেলে এ স্থলবন্দর দেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখতে পারবে।

Discussion about this post