শেয়ার বিজ ডেস্ক : দেশে গত ১০ বছরে উচ্চশিক্ষিত বেকার বেড়েছে সাড়ে ২৪ শতাংশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিনিয়োগ না বাড়লে এ সংকট দীর্ঘস্থায়ী হবে। দেশের প্রায় ৪৩ শতাংশ জনগোষ্ঠী তরুণ হলেও তারা যেন বোঝা না হয়, সেজন্য দ্রুত উদ্যোগ নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন তারা। তাদের মতে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় বাড়ছে না বিনিয়োগ। ফলে নতুন কর্মসংস্থান হচ্ছে না।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক এডিবির তথ্য মতে, জিডিপির আকারে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় বাংলাদেশ। গত এক দশকে প্রতিবছর জিডিপি বেড়েছে ৬-৭ শতাংশ। অথচ এ সময়ে কর্মসংস্থান বেড়েছে মাত্র ২ দশমিক দুই শতাংশ।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য বলছে, ১০ বছরে দেশে বেকার জনসংখ্যা ২৬ লাখ থেকে থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ছয় লাখে। অর্থাৎ ১০ বছরে বেকারের হার কমেছে মাত্র দশমিক এক চার ভাগ। এ অবস্থায় শিক্ষা কারিকুলামকে ঢেলে সাজানোর দাবি চাকরিপ্রত্যাশীদের।
চাকরিপ্রত্যাশী এক যুবক বলেন, ‘সেক্টরভিত্তিক যে জনশক্তি বা পড়ালেখাগুলো আছে সে অনুযায়ী যেন চাকরির সেক্টরগুলো তৈরি করা হয়।’
চাকরিপ্রত্যাশী এক নারী বলেন, ‘কারিগরি শিক্ষার জন্য যন্ত্রপাতি দেয়া দরকার। যাতে করে আমরা এদিকেই মনোযোগী হই।’ আরেক চাকরিপ্রত্যাশী বলেন, ‘তিন মাস চাকরির প্রস্তুতি নেয়ার পর আমি বুঝেছি, যে বিষয়ে আমি পড়াশোনা করেছি, সেটি আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়।’
এদিকে গত ১০ বছর উচ্চশিক্ষিত কর্মহীনের হার ৭ থেকে বেড়ে সাড়ে ৩১ শতাংশে পৌঁছেছে। ফলে যোগ্যতা থাকার পরও কাজ না পেয়ে হতাশ চাকরিপ্রত্যাশীরা।
এক নারী চাকরিপ্রত্যাশী বলেন, ‘গ্র্যাজুয়েশন অলরেডি কমপ্লিট। এমনকি পড়াশোনা শেষ হওয়ার অনেক দিন হয়ে গেছে কিন্তু তারা কোথায় টিকছে আবার কোথাও টিকতেছে না, এমন ছেলেমেয়েদের জন্য এটা আরও বেশি হতাশার হয়ে যায়।’
বাংলাদেশের বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. আশিকুর রহমান বলেন, ‘প্রবৃদ্ধি এবং চাকরি সৃষ্টির মধ্যে যে পার্থক্যটা, এটা হয়তো কিছুদিন আমাদের সহ্য করতে হবে।’ এই গবেষক বলেন, সেই আগের মতো বিনিয়োগ হচ্ছে না, এটার কিছুটা চাপ আমরা চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে দেখছি। তবে দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও শিল্পায়নে পরিকল্পিত বিনিয়োগ ছাড়া এ সংকট কাটানো সম্ভব নয় বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক।
অর্থনীতিবিদ আবু ইউসুফ বলেন, ‘গ্রোথ, উন্নয়ন বা প্রভাট্রি ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে কিন্তু চাকরির উন্নয়টা আসছে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে কর্মসংস্থানের উপযোগী কারিকুলামগুলো উন্নয়ন করতে হবে।’