শেয়ার বিজ ডেস্ক : বিশ্বব্যাপী মানবিক সহায়তা বাজেটে ব্যাপক কাটছাঁটের কারণে ১ কোটির বেশি শরণার্থী তাদের অত্যাবশ্যক সহায়তা হারানোর ঝুঁকিতে পড়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
জেনেভা থেকে গতকাল শুক্রবার এএফপি জানায়, জাতিসংঘের শরর্ণাী সংস্থা ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, ২০২৪ সালে তারা যে সংখ্যক শরণার্থী ও বাস্তুচ্যুত মানুষকে সহায়তা করেছিল, এবারের এই সংকট তার এক-তৃতীয়াংশকে প্রভাবিত করতে পারে।
একটি নতুন প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, বৈশ্বিক শরণার্থী সংকটের পেছনে রয়েছে এক ভয়াবহ সমন্বয়: ‘উর্ধ্বমুখী বাস্তুচ্যুতি, হ্রাসমান তহবিল এবং রাজনৈতিক উদাসীনতা।’
ইউএনএইচসিআরের প্রধান বহিঃসম্পর্ক বিষয়ক কর্মকর্তা ডমিনিক হাইড বলেন, ‘আমরা এখন এক মরণঘাতী ককটেলের মুখোমুখি… আমরা বিশ্বজুড়ে শরণার্থী ও বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর জন্য অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।’ যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশের বাজেট কর্তনের ফলে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য মানবিক সংস্থা বড় ধরনের অর্থ ঘাটতির মুখে পড়েছে।
এ বছর ইউএনএইচসিআরের প্রয়োজনীয় বাজেট ছিল ১০ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার, কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা পেয়েছে মাত্র ২৩ শতাংশ অর্থ। ফলে, সংস্থাটি ইতোমধ্যে প্রায় ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার মূল্যের জরুরি সহায়তা কার্যক্রম বাতিল বা স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে।
ডমিনিক হাইড বলেন, ‘ফলে, ১ কোটি ১৬ লাখ শরণার্থী এবং বাস্তুচ্যুত মানুষ ইউএনএইচসিআরের সহায়তা থেকে বঞ্চিত হতে পারে।’ এই পরিস্থিতিতে বহু পরিবারকে শিশুদের খাওয়ানো, ওষুধ কেনা এবং বাসা ভাড়ার মধ্যে যেকোনো একটি বেছে নিতে হচ্ছে।
সুদানে যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা শরর্ণাীরে পুষ্টিহীনতার হার ভয়াবহ। চাদে অবস্থানরত শিশুরে জন্য পুষ্টি পরীক্ষাও স্থগিত রাখা হয়েছে। চা এবং দক্ষিণ সুদানের সীমান্তে নতুন আগতরে নিরাপ স্থানে স্থানান্তর কার্যক্রমও বন্ধ করতে হয়েছে, ফলে হাজার হাজার মানুষ দুর্গম এলাকায় আটকে পড়েছে।
বাংলাদেশে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরর্ণাীর জন্য পরিচালিত ক্যাম্পগুলোয় ২ লাখ ৩০ হাজার শিশু ঝুঁকিতে, তাদের শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত হতে পারে। লেবাননে ইউএনএইচসিআরের পুরো স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চলতি বছরের শেষে সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
গত মাসে ইউএনএইচসিআর ঘোষণা করেছে, তারা বাজেট সংকটের কারণে বিশ্বজুড়ে তাদের প্রায় ৩ হাজার ৫০০ জন কর্মী ছাঁটাই করবে,যা মোট জনবলের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ।

Discussion about this post