নুরুন্নাহার চৌধুরী কলি : পতনের ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। দেশের পুঁজিবাজারে ধারাবাহিকভাবে লেনদেনের গতিও বাড়ছে। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেনও অনেকটাই বেড়েছে। তবে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ২৫ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ২১৯ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৯ দশমিক ৬১ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ১৪৬ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১৮ দশমিক ০৪ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৯৯৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনেেনও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৬টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১১৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ২১৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৫৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটেগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরির ২১৭টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৮৫টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১০৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৯টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটেগরির ৮২টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৬০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
‘জেড’ ক্যাটেগরির ৯৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৬১টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
এদিকে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের দরও কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৪টি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ১৭টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৫টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ৩১ কোটি ১৮ লাখ ৩৪ হাজার ৬৯৮টি শেয়ার ও ইউনিট দুই লাখ ৪০ হাজার ৬৭৬ বার হাতবদল হয়েছে। এর জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৮৬০ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৭৭৫ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মোট ২৫৯টি কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১০২টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১২৪টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার দর কমেছে। দিনশেষে ৩৩টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে গতকাল মোট ১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে; যা আগের কার্যদিবসে ছিল ১০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, গতকাল পুঁজিবাজারের এই তেজিভাব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। আগামী দিনগুলোয় বাজারের এই ইতিবাচক ধারা বজায় থাকে কিনা, সেটাই এখন খোর বিষয়। সূচক বাড়ার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে লেনেেনরও পরিমাণ বেড়েছে। এটি বাজারে বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং ইতিবাচক মনোভাবের ইঙ্গিত দেয়। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, আগামী দিনগুলোতেও এ ঊর্ধ্বমুখী ধারা বজায় থাকবে।

Discussion about this post