শেয়ার বিজ ডেস্ক : জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আসন্ন অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পরিকল্পনা করেছে কানাডা। ইসরাইল এর তীব্র সমালোচনা করেছে। অটোয়া থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে।
কানাডার অটোয়ায় অবস্থিত ইসরাইলি দূতাবাস জানিয়েছে, কানাডার এই পরিকল্পনা আমাদের ওপর আন্তর্জাতিকভাবে চাপ সৃষ্টি করার একটা ‘বিকৃত প্রচারণার অংশ’।
এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ‘জবাবদিহিমূলক সরকার, কার্যকর প্রতিষ্ঠান ও মানবিক নেতৃত্বহীন অবস্থায় ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া মানে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ভয়াবহ বর্বরতাকে পুরস্কৃত ও বৈধতা দেয়া।’
ফিলিস্তিনের মূলত দুই অংশ, গাজা ও পশ্চিম তীর। ফাতাহ পার্টির নেতৃত্বে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ পশ্চিম তীরের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করে। আর হামাস শাসন করে গাজা।
২০০৬ সালের পর থেকে কোনো নির্বাচনের আয়োজন হয়নি এ অঞ্চলে। ইসরাইলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কানাডার পদক্ষেপের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সের (আগের টুইটার) এক পোস্টে বলেছে, কানাডার এই পরিকল্পনা ‘গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের মুক্তির জন্য চলমান প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করবে।’
এছাড়া কানাডার কনজারভেটিভ পার্টিও মার্ক কার্নির ঘোষণার বিরোধিতা করেছে। দেশটির এই বিরোধী দল বলেছে, ‘২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার পর ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলে বিশ্বে ভুল বার্তা পৌঁছাবে।’
যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের ঘোষণার পর থেকেই মার্ক কার্নি অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়েন— এই ইস্যুতে কানাডার অবস্থান পরিষ্কার করার জন্য।
গত মঙ্গলবার ২০০ জনেরও বেশি প্রাক্তন কূটনীতিক ও রাষ্ট্রদূত একটি খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করে মার্ক কার্নিকে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘গাজায় ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষকে উচ্ছেদ, নির্বিচারে বোমা বর্ষণ, গাজায় ফিলিস্তিনিদেরকে না খাইয়ে রাখা, পশ্চিম তীরে দখলদারদের হামলা’ কানাডার মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
মার্ক কার্নিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, তিনি যুক্তরাজ্য বা ফ্রান্সের ঘোষণায় প্রভাবিত হয়েছেন কিনা বা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন কিনা। উত্তরে তিনি বলেন, কানাডা তার নিজস্ব পররাষ্ট্রনীতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়।
ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য যদি শেষ পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে ইসরাইলের ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্রই হবে একমাত্র স্থায়ী জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সদস্য, যারা এখনও এটি করেনি।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে আক্রমণ চালায়। এই হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত এবং ২৫১ জন জিম্মি হয়। তার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইল গাজায় সামরিক অভিযান চালায়।
গাজার হামাস-চালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং অপুষ্টিজনিত কারণে ৮৯ শিশুসহ অন্তত ১৫৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে।

Discussion about this post