নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী নির্বাচনে তরুণ প্রজন্মেরর কাছে ভোট চেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তরুণ প্রজšে§র উদ্দেশে তিনি বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে তোমাদের হারানো ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার এক বিরাট সুযোগ তৈরি হয়েছে। ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মেরর কাছে আমার আহ্বান, তারুণ্যের প্রথম ভোট, ধানের শীষের জন্য হোক। জুলাই গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গতকাল রোববার শাহবাগে ছাত্রদলের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, দেশের ১৩ কোটি ভোটারের মধ্যে গত দেড় দশকে প্রায় ৪ কোটি নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছে। তোমরা ভোটার হলেও ফ্যাসিবাদ চক্র তোমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তোমাদের হারানো ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিরাট সুযোগ তৈরি হয়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্বাবলম্বী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য বিএনপির গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য, পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলের গত দেড় দশকের ভোট প্রয়োগের অধিকার বঞ্চিত ৩ কোটি ভোটারসহ সবার সমর্থন ও সহযোগিতা চাই।
তরুণের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, শহিদদের কাক্সিক্ষত বাংলাদেশ গড়ার জন্য যা যা প্রয়োজন এবং নিজেদের যোগ্য করার জন্য তোমরা (তরুণ) সকলে তা গ্রহণ করবে, এই হোক আজকের প্রতিজ্ঞা।
শিক্ষাব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন, কর্মসংস্থান ভিত্তিক শিক্ষা, যোগ্য নেতৃত্ব হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলা, ইংরেজিসহ বিভিন্ন ভাষা শিক্ষা, ই-কমার্স, আউটসোর্সিং, উচ্চশিক্ষায় মেধাবী প্রজন্ম গড়ে তোলা, বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগসহ বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনার কথা তুলে ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, সারাদেশের শিক্ষার্থী, ছাত্রদলের নেতাকর্মী এবং তরুণ প্রজšে§র ভাই-বোনেরা এই সমাবেশে এবং সারাদেশের শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্মেরর সামনে বিএনপির গৃহীত কয়েকটি প্ল্যান প্রোগ্রাম তুলে ধরার অবশ্যই একটি উদ্দেশ্য রয়েছে। কী সেই উদ্দেশ্য, কী সেই লক্ষ্য? তিনি বলেন, সেটি হলো আমাদের প্রত্যেকেরই মা রয়েছে। একজন মায়ের চোখে বাংলাদেশ যেমন অর্থাৎ আগামী দিনে আমরা নবীন ও প্রবীণ সবাই মিলে তেমন একটি বাংলাদেশ করতে চাই। একজন মায়ের চোখে যেমন বাংলাদেশ, তেমন একটি বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই নবীন ও প্রবীণ সবাই মিলে।
তারেক রহমান ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে বলেন, দেশের সব শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্মেরর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, আজকের এই তারুণ্য আজকের এই শিক্ষার্থীরা আগামীর বাংলাদেশ। ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ চরমপন্থার উৎখাত কিংবা পুনর্বাসন ঠেকাতে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে, সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে, যার আহ্বান আজকের এই সমাবেশের সভাপতি (ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব) সবাইকে দিয়ে গিয়েছে।
তিনি বলেন, গ্লোবালাইজেশনের এই সময়ে নারী-পুরুষ সবার সামনে কিন্তু সব সম্ভাবনার দ্বার আজ উন্মুক্ত। টেকনোলজিক্যাল কারণে আমাদের এই তারুণ্য ও শিক্ষার্থীরা যাতে সব সম্ভাবনাকে সাফল্যে রূপান্তরিত করতে সক্ষম হয়, এজন্য একটি বাস্তবধর্মী সুষ্ঠু নীতি পরিকল্পনা আমরা তৈরি করছি। এটি বিএনপি তরুণ প্রজšে§র সামনে উপস্থাপন করতে চায়, যাতে করে আগামী দিনে তোমাদের পথ চলা সহজ হয়ে যায়।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির এই সময়ে বিশ্ববাজারের সঙ্গে দক্ষতা এবং যোগ্যতার প্রতিযোগিতায় যদি টিকে থাকতে হয় তাহলে অবশ্যই সবাইকে তথ্যপ্রযুক্তি এবং কারিগরি শিক্ষায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে। ইনশাআল্লাহ আগামী দিনে জনগণের রায় বিএনপি আবারও রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে এবার আমরা স্কুল পর্যায় থেকে কারিকুলামের ভেতরে আইসিটি এবং কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থাটিকে আমরা প্রবর্তন করব।
তারেক রহমান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঐতিহাসিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ইতিহাস জড়িয়ে আছে। বর্তমানে যারা এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাদের সামনে এই ক্যাম্পাসকে জ্ঞানচর্চা এবং গবেষণার একটি নিরাপদ ভূমি হিসেবে প্রতিষ্ঠার সুযোগ এসেছে। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবজনক ইতিহাস আবারও ছড়িয়ে দিতে হবে।
তিনি বলেন, তোমাদের যারা উত্তরসূরি শিক্ষার্থী তাদের মনের ভেতরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের নেতাকর্মী এবং কিছু সংখ্যক শিক্ষার্থীর সঙ্গে আমি সরাসরি কথা বলেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট নিরসনে আবাসিক হলগুলোয় বসবাস ও খাবারের মান বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। এ ব্যাপারে আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে হলগুলোয় বিদ্যমান সমস্যা এবং সমাধানের একটি লিখিত প্রস্তাবনা বিএনপির কাছে উপস্থাপনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানাচ্ছি।
বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, একইভাবে দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে সেসব বিশ্ববিদ্যালয় সমস্যা এবং সম্ভাবনা নিয়ে সুপারিশসহ রিপোর্ট তৈরি করার জন্য ইতোমধ্যে বিএনপির পক্ষ থেকে ছাত্রদলের সংশ্লিষ্ট নেতাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিব্লু ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি আবু আফসার মো. ইয়াহিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম ও সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান বক্তব্য দেন। সমাবেশে ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের মধ্যে নাজিম উদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, আকরামুল হাসান, ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল ও রাশেদ ইকবাল খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Discussion about this post