নিজস্ব প্রতিবেদক : আবারও পতনের মুখে পড়েছে পুঁজিবাজার। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেনও কিছুটা কমেছে। এদিকে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৫০ দশমিক ২৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৮৫ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৮ দশমিক ০৫ পয়েন্ট কমে এক হাজার ১৮৫ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ২০ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১২৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় কিছুটা কমেছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশিরভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৭টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ১২২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ২০৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৬৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটাগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ২১৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ৬৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১১৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৩৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৮২টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে ৩২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৪২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
জেড’ ক্যাটাগরির ৯৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে ২৪টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৪৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
একইসাথে মিউচুয়াল ফান্ড খাতেও বেশিরভাগ ফান্ডের ইউনিটের দরও কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৬টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৮টি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ১০টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৮টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ৩২ কোটি ৭৫ লাখ ৩২ হাজার ৮৮৭টি শেয়ার ও ইউনিট দুই লাখ ৩৭ হাজার ৯২৭ বার হাতবদল হয়েছে। এর জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৯১১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ১৩৭ কোটি ৪০ টাকা।
এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে যমুনা ব্যাংক। কোম্পানিটির ৩১ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩১ কোটি এক লাখ টাকার। ২৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সিটি ব্যাংক।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ইনফিউশন, উত্তরা ব্যাংক, বেক্সিমকো ফার্মা, ব্যাংক এশিয়া, ব্র্যাক ব্যাংক, মালেক স্পিনিং এবং ট্রাস্ট ব্যাংক।
এদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল মোট ২২৭টি কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৯৬টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১১২টি কোম্পানি ও ফান্ডের শেয়ার দর কমেছে। দিনশেষে ১৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর অপরিবর্তিত ছিল। সিএসইতে গতকাল মোট ১০ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। যা আগের কার্যদিবসে ছিল ২০ কোটি ৬ লাখ টাকা।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষকদের মতে, গতকালের পুঁজিবাজারে মূল্যসূচকের পতন এবং বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমে যাওয়া বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ তৈরি করেছে। আগামী দিনগুলোতে বাজারের গতিবিধি কেমন থাকে, তা দেখার জন্য সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা বিনিয়োগকারীদের গুজবে কান না দিয়ে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। আগামী কার্যদিবসে বাজারের গতিবিধি কী হয়, তা জানতে অপেক্ষাও করতে বলছেন তারা।

Discussion about this post