শেয়ার বিজ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সেমিকন্ডাক্টর (চিপ) আমদানির ওপর ৩০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক (ট্যারিফ) আরোপের হুমকি দিয়েছেন। তবে যেসব বিদেশি প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদনে বিনিয়োগ করবে, তারা এই শুল্ক থেকে ছাড় পেতে পারে। খবর-আল জাজিরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের মূল লক্ষ্য হলো যুক্তরাষ্ট্রে প্রযুক্তি খাতে পুনঃবিনিয়োগ এবং উৎপাদন ফিরিয়ে আনা।
কানাডার টেকইনসাইটসের ভাইস চেয়ার ড্যান হাচেসন বলেন, এই উদ্যোগের প্রধান লক্ষ্য হলো যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদনের যে খরচে অসুবিধা রয়েছে, তা দূর করে একে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধায় পরিণত করা।
এই শুল্কের মাধ্যমে ট্রাম্প মূলত সেই কোম্পানিগুলোকেই চাপ দিচ্ছেন, যারা এখনও যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করেনি। তবে যে কোম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদনে আগ্রহী, তাদের জন্য আলোচনা করে ছাড় দেয়া হবে।
এছাড়া এই পদক্ষেপ চীনের সঙ্গে প্রযুক্তিগত প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করার কৌশলের অংশ হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
যেসব আন্তর্জাতিক কোম্পানি এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করেছে— যেমন তাইওয়ানের টিএসএমসি এবং দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং তারা সম্ভবত এই শুল্কের আওতামুক্ত থাকবে।
তবে চীনের চিপ উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর জন্য এটি বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এই শুল্ক চীন-যুক্তরাষ্ট্র চলমান বাণিজ্য আলোচনা এবং কৌশলগত প্রতিযোগিতায় একটি চাপ সৃষ্টির উপকরণ হিসেবেও ব্যবহূত হতে পারে।
সিঙ্গাপুরের লি কুয়ান ইউ স্কুল অব পাবলিক পলিসির সহকারী অধ্যাপক ইয়ংউক রিউ বলেন, যেখানে সামগ্রিক শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমানো ও উৎপাদন ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে সেখানে সেমিকন্ডাক্টরের মতো খাতভিত্তিক শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিগত আধিপত্য বজায় রাখা এবং চীনকে নিয়ন্ত্রণে আনার কৌশলগত চেষ্টা।
বিশ্বব্যাপী চিপ উৎপাদন ও সরবরাহ একটি জটিল আন্তঃনির্ভরশীল প্রক্রিয়া। এত উচ্চ হারে শুল্ক আরোপে সেই কাঠামোতে বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
তাছাড়া উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যেতে পারে, যার ফলে ভোক্তাপণ্যের দাম বাড়বে— বিশেষ করে ইলেকট্রনিকস, গাড়ি ও স্মার্ট ডিভাইসের ক্ষেত্রে।
ট্রাম্পের পদক্ষেপে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো হয়তো যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা স্থাপনে বাধ্য হবে, তবে এতে তাদের ব্যয় ও ঝুঁকি বেড়ে যাবে।

Discussion about this post