শেয়ার বিজ ডেস্ক : ভূমধ্যসাগরে অভিবাসীবাহী একটি নৌকা দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পর সমুদ্রে ৭ জন নিখোঁজ এবং আরও ৪১ জনকে ইতালির ল্যাম্পেডুসা দ্বীপে আনা হয়েছে বলে বুধবার জানিয়েছে জার্মান এনজিও সি-ওয়াচ।
রোম থেকে এএফপি এই খবর জানিয়েছে। এনজিওটি জানিয়েছে, বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের মধ্যে বেশির ভাগই সুদানী। গত মঙ্গলবার রাতে ল্যাম্পেডুসায় নৌকা থেকে নামার আগে তারা ছয় দিন ধরে সমুদ্রে ছিলেন। তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষের সাহায্য প্রত্যাখ্যান করার পর সি-ওয়াচের জাহাজ অরোরা তাদের উদ্ধার করে।
নৌকায় থাকা ব্যক্তিদের সাক্ষ্য অনুযায়ী, নৌকাটি ২৭ আগস্ট লিবিয়া ছেড়ে যায় কিন্তু তিউনিসিয়া ও মাল্টার মধ্যবর্তী আন্তর্জাতিক জলসীমায় আটকা পড়ে। এতে সাতজন অভািবাসী গভীর সমুদ্রে তলিয়ে যায়।
সি-ওয়াচের এক মুখপাত্র এএফপি’কে বলেছেন, তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষ ৪১ জন জীবিত ব্যক্তিকে উদ্ধারের জন্য মিসকার গ্যাসক্ষেত্রে একটি সরবরাহ জাহাজকে নির্দেশ দেয় এবং তিউনিসিয়ার নৌবাহিনী কয়েকদিন পরে সেখানে পৌঁছায়। কিন্তু অভিবাসীরা তাদের সঙ্গে যেতে অস্বীকৃতি জানায়।
তিনি বলেছেন, ‘এই লোকদের মধ্যে কেউ কেউ মনে করেন তিউনিসিয়ায় জোর করে পাঠানোর চেয়ে মরে যাওয়াই ভালো’।
সি-ওয়াচ তাদের পর্যবেক্ষণ বিমান দিয়ে ঘটনাবলি পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছে, মাল্টা তাদের সাহায্যের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে কিন্তু অবশেষে তিউনিসিয়ার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অভিবাসীদের সংগ্রহের অনুমতি পেয়েছে।
অরোরা তাদের তিউনিসিয়ার উপকূল থেকে মাত্র ৯০ মাইল (১৪৫ কিলোমিটার) দূরে অবস্থিত ল্যাম্পেডুসায় নিয়ে গেছে।
প্রতি বছর সমুদ্রপথে ইউরোপে যেতে ইচ্ছুক হাজার হাজার আফ্রিকান অভিবাসীর জন্য তিউনিসিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট।
২০২৩ সালে, তিউনিসিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ২৫৫ মিলিয়ন ইউরো (২৯০ মিলিয়ন ডলার) চুক্তি স্বাক্ষর করে, যার প্রায় অর্ধেক অর্থ অনিয়মিত অভিবাসন মোকাবিলার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল।
এই চুক্তির লক্ষ্য ছিল তিউনিসিয়ার উপকূল ছেড়ে যাওয়া নৌকা বন্ধ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। কিন্তু প্রচারকরা বলছেন, অভিবাসীরা দেশে বৈষম্য, বর্ণবাদ এবং সহিংসতার সম্মুখীন হচ্ছেন।
ইতালির কট্টর-ডানপন্থি সরকার নৌকা বন্ধ করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে তিউনিসিয়ার চুক্তিকে সমর্থন করেছিল, যার মধ্যে এনজিও জাহাজের কার্যক্রম সীমিত করাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

Discussion about this post