শেয়ার বিজ ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভস জানিয়েছেন, দেশের বাজেট ঘোষণা করা হবে ২৬ নভেম্বর। এই বাজেটে সরকার তার কর ও ব্যয় পরিকল্পনা উপস্থাপন করবে, যা হাসপাতাল, স্কুল, পুলিশ ও সামরিক খাতের খরচ ঢাকতে সাহায্য করবে। খবর: এএফপি।
চ্যান্সেলর রিভসের সামনে চাপ রয়েছে জনসম্পদের ভারসাম্য রক্ষা করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক বৃদ্ধি বাড়ানো এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখার। অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন, সরকারের ধারাবাহিক ঋণ নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা মেনে চলতে হলে কর বৃদ্ধি বা ব্যয় কমানো অনিবার্য, কারণ অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ধীর হচ্ছে এবং মূল্যস্ফীতি বাড়ছে।
রিভস জানিয়েছে, তার বাজেট মূলত ‘অর্থনীতিতে বিনিয়োগ নিশ্চিত করা এবং দেশের যে কোনো স্থানে কাজ করা মানুষদের অবস্থার উন্নতি’ নিশ্চিত করার ওপর মনোনিবেশ করবে। লেবার পার্টির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে উল্লেখ ছিলÑসাধারণ কর্মরত মানুষদের ওপর কর বৃদ্ধি করা হবে না, যার মধ্যে ভ্যাট, জাতীয় বীমা ও আয়কর অন্তর্ভুক্ত।
গত বছরের বাজেটে রিভস নন-ওয়ার্কিং ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স বাড়িয়েছিলেন, যা ব্যবসা খাতের মধ্যে সমালোচনা সৃষ্টি করেছিল। এবার বাজেটে করের সম্ভাব্য পরিবর্তন নিয়ে অল্প থেকে বড় ধরনের নানা জল্পনা চলছে, যেমন ব্যাংকের মুনাফার ওপর অতিরিক্ত কর, সম্পত্তি কর সংস্কার বা কাউন্সিল ট্যাক্স পরিবর্তন।
দীর্ঘমেয়াদি ঋণের খরচ ১৯৯৮ সালের পর সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়, যা সরকারের জন্য ঋণ পরিষেবা ব্যয় বাড়াচ্ছে এবং চ্যান্সেলরের ১০ বিলিয়ন পাউন্ড অর্থনৈতিক সংরক্ষণকে হ্রাস করছে। কনজারভেটিভ নেতা কেমি ব্যাডেনক বলেছেন, এই ঋণ বৃদ্ধির দায় লেবারের ‘খারাপ সিদ্ধান্তের’। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, লেবার সরকার তাদের প্রথম বছর টরিদের তৈরি অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ব্যয় করেছেন।
রিভস জানিয়েছেন, তিনি সরকারি স্বাধীন অর্থনৈতিক সংস্থা ওবিআর’কে ১০ সপ্তাহের প্রক্রিয়া শুরু করতে বলেছেন, যা নতুন নীতির ভিত্তিতে অর্থনৈতিক পূর্বাভাস তৈরি করবে। ওবিআরের মূল্যায়ন সরকারি পরিকল্পনার বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখতে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ।
রিভসের দুটি অ-আলোচ্য ঋণনীতি হলোÑ২০২৯-৩০ সালের মধ্যে দৈনন্দিন সরকারি ব্যয় কর আয় দিয়ে অর্থায়ন হবে, ঋণ নয়। একই সময়ের মধ্যে জাতীয় আয়ের সঙ্গে ঋণ অনুপাত কমানো।
ওবিআর বাজেটের বিশ্লেষণ করে দেখাবে কতটা কর বৃদ্ধি বা ব্যয় কমানো প্রয়োজন। এরপর সরকার তাদের পরিকল্পনা উপস্থাপন করবে। রিভস বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য পুনর্নবীকরণ ও বৃদ্ধি। বিনিয়োগ ও সংস্কারই আমাদের হাতিয়ার।’
অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করেছেন, দীর্ঘমেয়াদি ঋণের খরচ বেড়ে যাওয়ায় সরকারের পরিকল্পনা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে। তবে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদি ঋণের খরচকে অতিরিক্ত গুরুত্ব না দেয়াই ভালো।

Discussion about this post