শেয়ার বিজ ডেস্ক : মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে নতুন ইতিহাস গড়ল জেফ বেজোসের ব্লু অরিজিন। মঙ্গল গ্রহ অভিমুখে যমজ নাসা মহাকাশযান বহনকারী রকেট ব্লু এবং গোল্ড ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল স্টেশন থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মঙ্গল গ্রহগামী নিউ গ্লেন বুস্টার সফলভাবে পাড়ি দিয়েছে।
এই সাফল্য ব্লু অরিজিনকে স্পেসএক্সের ফ্যালকন-৯ পুনঃব্যবহারযোগ্য মডেলের আরও কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছে। আগামী দিনে তা বাণিজ্যিক এবং নাসার মিশনের সম্ভাবনাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে সবাই আশাবাদী।
ব্লু অরিজিনের ৩২১ ফুট লম্বা নিউ গ্লেন রকেটটি বৃহস্পতিবার ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরাল স্পেস ফোর্স স্টেশন থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এপি নিউজ জানিয়েছে, এই মিশনটি নাসার জন্য যমজ এস্ক্যাপেড মহাকাশযান এবং ভায়াসাত এর জন্য একটি প্রদর্শনী পেলোড বহন করেছে।
জানা গেছে, রকেটের প্রথম পর্যায়ের বুস্টারটি স্বায়ত্ত শাসিতভাবে সমুদ্র-ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম জ্যাকলিন-এ সোজা হয়ে অবতরণ করেছে। এই অঞ্চলটি আটলান্টিকের প্রায় ৩৭৫ মাইল ডাউনরেঞ্জে অবস্থিত। এপি এটিকে পুনরুদ্ধার পর্যায়ে একটি অসাধারণ অর্জন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। প্রসঙ্গত, জানুয়ারিতে নিউ গ্লেনের প্রথম উৎক্ষেপণ কক্ষপথে পৌঁছালেও বুস্টারটি অবতরণ করতে ব্যর্থ হয়।
এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৭ সালে এস্ক্যাপেড মঙ্গলে পৌঁছাবে। এরপরের শরতে যখন পৃথিবী এবং মঙ্গল গ্রহ আদর্শ সারিবদ্ধ অবস্থায় থাকবে, তখন পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ এস্ক্যাপেড কে মঙ্গল গ্রহে ভ্রমণ করতে সাহায্য করবে।
মঙ্গল গ্রহ প্রদক্ষিণ করার পর মহাকাশযানটি ওই গ্রহের বাইরের বায়ুমণ্ডল এবং বিক্ষিপ্ত চৌম্বক ক্ষেত্র পরীক্ষা করবে। একই সঙ্গে সৌর বায়ুর সঙ্গে এই বায়ুমণ্ডলগুলি কীভাবে মিথস্ক্রিয়া করে তা পরীক্ষা করবে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই শক্তিশালী রকেটটি ৩২ তলা উঁচু। ১৬ জানুয়ারি নিউ গ্লেনের প্রথম পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের পর এটি ব্লু অরিজিনের প্রথম অভিযান। দিন কয়েক আগেই তা উৎক্ষেপণ করার কথা ছিল। কিন্তু প্রযুক্তিগত কারণে তাতে কিছুটা বিলম্ব হয়।
এসকাপেডের প্রধান বিজ্ঞানী, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্কলে-এর রব লিলিস উৎক্ষেপণের আগে জানান, মঙ্গল গ্রহের সঙ্গে সৌর বায়ুর মিথস্ক্রিয়াকে এখনকার চেয়ে আরও ভালোভাবে বুঝতে চাইছেন তারা।
মঙ্গল গ্রহের আবহাওয়ার পরিবর্তন সংক্রান্ত গবেষণা করার জন্য এই জোড়া মহাকাশযানকে পাঠানো হচ্ছে। তাদের কাজ হবে মঙ্গলের চারপাশের পরিবেশ ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা। সেই সঙ্গে মঙ্গল সম্পর্কে বেশি করে তথ্য সংগ্রহ করা। মিশনটি সফল হলে মঙ্গল গ্রহ সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বিজ্ঞানীদের হাতে আসবে।
এই দুটি মহাকাশযানের ২০২৭ সালে মঙ্গলে পৌঁছনোর কথা থাকলেও দু’টি মহাকাশযানের গতিপথ কিছুটা আলাদা। এরা প্রথমেই মঙ্গলের দিকে উড়ে যাবে না। প্রথমে মহাকাশযান দুটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১.৫ মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে গিয়ে পৌঁছাবে। সেই জায়গাটা হলো পৃথিবী-সূর্যের মাঝে এল২ পয়েন্ট বা ল্যাগারাঞ্জিয়ান পয়েন্ট। তারা সেখানে থাকবে ২০২৬ সালের শেষ পর্যন্ত। এর পরে দুটি মহাকাশযান মঙ্গলের দিকে যাত্রা শুরু করবে।
এই উৎক্ষেপণের ফলে মঙ্গল গ্রহ সম্পর্কে বিভিন্ন অজানা তথ্য বিজ্ঞানীদের হাতে আসবে তাই নয়, বরং তা ভবিষ্যতের রকেট প্রযুক্তির জন্যও একটা বড় পদক্ষেপ।
এস এস/
প্রিন্ট করুন









Discussion about this post