নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পুঁজিবাজারে রুলস (বিধি) তৈরি হওয়ার আগেই সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম। রাজধানীর নিকুঞ্জে ডিএসই টাওয়ারে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক অফার অব ইক্যুইটি সিকিউরিটিজ) রুলস, ২০২৫’ শীর্ষক বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে গতকাল বুধবার এসব কথা বলেন তিনি।
ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম বলেন, পুঁজিবাজারে অনেক সমস্যা আছে, যে কারণে ভালো কোম্পানিগুলো এখনো তালিকাভুক্ত হয়নি। এ সমস্যাগুলো দূর করতে রুলস হওয়ার আগেই সমাধান খুঁজতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে হবে।
মমিনুল ইসলাম বলেন, আমাদের মার্কেটের পরিধি বাড়াতে ভালো এবং নতুন নতুন প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) আনতে হবে। আমাদের দেশে পুঁজিবাজারের সমস্যাকালে দরজা-জানালা বন্ধ হয়ে যেতে দেখা যায়। নিয়ন্ত্রক সংস্থার দায়িত্বে যারা থাকেন, তাদের হাতেও রুলসের জন্য অনেক সময় কিছু করার থাকে না। তাই দরজা-জানালা যেন বন্ধ না হয়, সেজন্য রুলস করার আগেই আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজা উচিত।
তিনি বলেন, বাজারে ভালো কোম্পানির সংখ্যা খুবই কম। ভালো কোম্পানির তালিকাভুক্তি বাড়ানোয় সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। এই জায়গায় কাজ করার অনেক সুযোগ রয়েছে। তাই ভালো কোম্পানিগুলোকে বাজারে আনার মতো করেই রুলস তৈরি করতে হবে।
পাঁচ ব্যাংককে একীভূত করার কারণে শেয়ারহোল্ডাররা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে বিষয়ে আমাদের চেষ্টা চলছে বলেও জানান ডিএসই চেয়ারম্যান।
অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে আর্থিক সংকটে পড়া পাঁচ ব্যাংকে (এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক) একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছে। পাঁচ ব্যাংকের আজকের অবস্থার জন্য রেগুলেটর, নিরীক্ষকসহ সবার ব্যর্থতা ছিল জানিয়ে মমিনুল ইসলাম বলেন, পাঁচ ব্যাংকে প্রায় ৭৫ লাখ আমানতকারী রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক শুধু বিশেষ ক্ষমতাবলে ব্যাংকগুলোর আমানতকারীদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছে। সেখানে শেয়ারহোল্ডারদের বিষয়টি গুরুত্ব দেয়া হয়নি।
একীভূত করার ক্ষেত্রে পাঁচ ব্যাংকের শেয়ার শূন্য করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ প্রসঙ্গে মমিনুল ইসলাম বলেন, পাঁচ ব্যাংক ইস্যুতে আমরা সরকার, অর্থ মন্ত্রণালয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করছি, যাতে একীভূত ব্যাংকগুলোর শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতির বিষয়টি বিবেচনায় আনা হয়, যেন তারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। ইতোমধ্যে আমাদের ভয়েস রেইজ করছি শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষায়। এ বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে পাঁচ ব্যাংক নিয়ে যা হয়েছে, তা অতীতে হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে না হয়, এজন্য ডিএসই কাজ করছে। এটাও ভাবতে হবে, একটি বিশেষ অবস্থায় দেশ চলছে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ) যৌথভাবে এ বৈঠকের আয়োজন করে। এতে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজ (বিএপিএলসি), বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ), ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (ডিসিসিআই), বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজের (বিএপিআই) প্রতিনিধি ও পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা উপস্থিত ছিলেন।
প্রিন্ট করুন







Discussion about this post