Print Date & Time : 18 August 2025 Monday 12:14 pm

অতিরিক্ত টিউশন ফি বন্ধে তদারকির নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বেসরকারি স্কুল-কলেজগুলোয় অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধে নীতিমালা জারির পর এবার তদারকির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নতুন শিক্ষার্থী ভর্তির সময় বেসরকারি স্কুলগুলো নির্ধারিত টিউশন ফির বাইরে যেন অতিরিক্ত টাকা আদায় করতে না পারে সে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের তদারকি করতে বলেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর। যেসব এলাকার কমিটি এখনও টিউশন ফি নির্ধারণ করেনি, সেসব এলাকার স্কুলগুলোকে আপাতত তা না নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম রেজাউল করীম স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় এসব বলা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী গঠিত মহানগরের কমিটি সিটি করপোরেশন ও মহানগর এলাকার এমপিওভুক্ত ও নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি বা মাসিক বেতন নির্ধারণ করবে। অপরদিকে জেলা কমিটি জেলা সদর, পৌর এলাকা ও উপজেলা পর্যায়ে?র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর টিউশন ফি বা মাসিক বেতন নির্ধারণ করবে।

অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল বলেন, ‘কোনো স্কুল যেন নীতিমালা অনুযায়ী নির্ধারিত ফির বাইরে অতিরিক্ত ফি আদায় করতে না পারে তা তদারকি করতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে।’
সহকারী পরিচালক এসএম জিয়াউল হায়দার হেনরী বলেন, ‘টিউশন ফি নীতিমালা অনুয়ায়ী মহানগর ও জেলা কমিটি যেসব এলাকার টিউশন ফি এখনও নির্ধারণ করেনি ওই এলাকার স্কুলগুলো আপাতত তা নিতে পারবে না। তবে কমিটি নীতিমালা মেনে টিউশন ফি নির্ধারণ করে দিলে সে অনুযায়ী পরে অভিভাবকদের কাছ থেকে নিতে পারবে বেসরকারি স্কুলগুলো। আমরা আশা করছি, নীতিমালা মেনে সব স্কুল কমিটি নির্ধারিত ফি আদায় করবে। এর বেশি ফি নেবে না।’

দেশের বেসরকারি স্কুল-কলেজগুলোয় ‘গলাকাটা’ ফি আদায়ের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এবার তাতে ‘লাগাম’ দিয়ে গত ২৭ অক্টোবর টিউশন ফি নীতিমালা-২০২৪ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এই নীতিমালা অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তা, অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকদের সমন্বয়ে দুটি কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে, যারা মহানগর ও জেলা পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি বা মাসিক বেতন নির্ধারণ করে দেবে। শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতনের বাইরে অন্যান্য সব ফি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।
এই নীতিমালা অনুযায়ী, মহানগর পর্যায়ের এমপিওভুক্ত স্কুলগুলো মাসিক বেতন, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার ফি এবং স্কাউটস, গার্লস গাইড, বিএনসিসি ও রেড ক্রিসেন্ট ফি ছাড়া বছরে ২ হাজার ৩১৫ টাকা টিউশন ফি নিতে পারবে একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের টিফিন সরবরাহ করলে এ খাতে মাসিক ১৫০ টাকা হারে বছরে আরও ১ হাজার ৮০০ টাকা নিতে পারবে।

জেলা ও উপজেলা সদর পর্যায়ের এমপিওভুক্ত স্কুলগুলো মাসিক বেতন, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার ফি এবং স্কাউটস, গার্লস গাইড, বিএনসিসি ও রেড ক্রিসেন্ট ফি ছাড়া বছরে ১ হাজার ৭০০ টাকা টিউশন ফি নিতে পারবে একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে। আর শিক্ষার্থীদের টিফিন সরবরাহ করলে এ খাতে মাসিক ১৫০ টাকা হারে বছরে আরও ১ হাজার ৮০০ টাকা নিতে পারবে। মফস্বল পর্যায়ের এমপিওভুক্ত স্কুলগুলো মাসিক বেতন, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার ফি এবং স্কাউটস, গার্লস গাইড, বিএনসিসি ও রেড ক্রিসেন্ট ফি ছাড়া বছরে ১ হাজার ৩০৫ টাকা করে টিউশন ফি নিতে পারবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে। যদি টিফিন দেয় তাহলে মাসে ১০০ টাকা করে বছরে আরও ১ হাজার ২০০ টাকা নিতে পারবে।
মহানগর পর্যায়ের নন-এমপিও স্কুলগুলো মাসিক বেতন, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার ফি এবং স্কাউটস, গার্লস গাইড, বিএনসিসি ও রেড ক্রিসেন্ট ফি ছাড়া বছরে ৩ হাজার ৮২৫ টাকা টিউশন ফি নিতে পারবে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে। যদি শিক্ষার্থীদের টিফিন দেয় তাহলে মাসিক ২০০ টাকা করে বছরে আরও ২ হাজার ৪০০ টাকা নিতে পারবে।

জেলা ও উপজেলা সদর পর্যায়ের নন-এমপিও স্কুলগুলো মাসিক বেতন, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার ফি এবং স্কাউটস, গার্লস গাইড, বিএনসিসি ও রেড ক্রিসেন্ট ফি ছাড়া বছরে একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২ হাজার ৫৫৫ টাকা ফি নিতে পারবে। আর যদি টিফিন দেয় তাহলে ১৫০ টাকা হারে বছরে আরও ১ হাজার ৮০০ টাকা নিতে পারবে। মফস্বল পর্যায়ের নন-এমপিও স্কুলগুলো মাসিক বেতন, অভ্যন্তরীণ পরীক্ষার ফি এবং স্কাউটস, গার্লস গাইড, বিএনসিসি ও রেড ক্রিসেন্ট ফি ছাড়া বছরে ১ হাজার ৭৬০ টাকা ফি নিতে পারবে প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে। যদি শিক্ষার্থীদের টিফিন সরবরাহ করে তাহলে এর জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে প্রতি মাসে ১০০ টাকা করে বছরে আরও ১ হাজার ২০০ টাকা নিতে পারবে।