ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম প্রভৃতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইনে বিচরণ বাস্তব ও কল্পনাজগতের এক অদ্ভুত নাম, যা আমাদের তরুণ সমাজ কমবেশি প্রায় সবাই ব্যবহার করি। কিন্তু চিন্তার বিষয় হলো, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে বিশেষ করে তরুণ সমাজ এতে আসক্ত হয়ে পড়েছে। যে সময়টা তাদের লেখাপড়া, নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা করা, তারুণ্যের শক্তিকে দেশ ও সুষ্ঠু সমাজ বিনির্মাণে কাজে লাগানোর সময়, সে সময়টা তারা অলসতা, অবহেলা আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্ত হয়ে কিংবা অনলাইনে অবাধ বিচরণ করে নষ্ট করছে। নিয়মিত পত্রপত্রিকার পাতায় দেখা যায়, তারুণ্যের ব্যর্থতা ও হতাশার চিত্র। চরম পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, এমনকি তারা এখন আত্মহত্যার মতো জঘন্য পথেও হাঁটছে, যা একটি দেশের জন্য অমঙ্গল ও অকল্যাণকর, কেননা তারুণ্য দেশের প্রাণশক্তি। বিভিন্ন গণমাধ্যম, সোশ্যাল মিডিয়া ও গবেষকরা এ নিয়ে ভয়াবহতার চিত্র তুলে ধরার পরেও তারুণ্যের মাত্রাতিরিক্ত পদচারণা কমছে না কোনোক্রমেই, যা দেশব্যাপী ধ্বংসাত্মক ও এক ধরনের ব্যাধি-আসক্তির মতো রূপ নিয়েছে। অথচ তারুণ্য আগামী প্রজšে§র ভবিষ্যৎ ও প্রাণ। তাদের চিন্তাচেতনা ও পরিকল্পনায় দেশ এগিয়ে যাবে। দেশ ও জাতির উন্নয়নে, সমাজ সংশোধনে এবং সমৃদ্ধ জাতি গঠনে তারা অবদান রাখবে। কিন্তু চরম পরিতাপ ও আফসোসের বিষয় হলো, বাস্তব সমাজের চিত্র তার উল্টো। কিছু এই সাদা-নীল পর্দায় তারুণ্যের চিত্র প্রতিনিয়তই আমাদের অবাক করছে। তাদের অসংযত ও অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের ফলে এবং অযাচিত পদচারণায় নেতিবাচক প্রভাবে সুস্থ মানসিক বিকাশ চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের এই তরুণ সমাজের উদ্দেশ্য ও গন্তব্য। সচেতন নাগরিক এবং দেশকে সমৃদ্ধ ও গতিশীল করতে দেশের আগামী প্রজšে§র সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ পূরণে বিচ্যুতির পথে হাঁটা এই তারুণ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবা আমাদের অত্যন্ত প্রয়োজন, নৈতিক দায়িত্বও বটে। তরুণ সমাজকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রতি এই চরম আসক্তি থেকে বাঁচাতে জনসচেতনতার পাশাপাশি প্রশাসনের একাত্মতা জরুরি। আত্মসচেতনতা বোধ বাড়ানো এবং অসংযত ভুল ব্যবহারের পরিবর্তে নিয়ন্ত্রিত কল্যাণকর ব্যবহার করতে পারি। তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইনে অযাচিত বিচরণে নিমগ্নতা এবং সম্পৃক্ততায় সংক্ষিপ্ততা আনতে হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইন সর্বোচ্চ যথাযথ ব্যবহার, প্রয়োগ এবং সতর্ক-সচেতনতাই পারে একটি সুন্দর, সুশীল এবং সমৃদ্ধ দেশ ও জাতি তৈরি করতে। তাই আসুন আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে তারুণ্যের এই চ্যালেঞ্জিং ভবিষ্যৎকে সামনে রেখে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও অনলাইনের ইতিবাচক প্রায়োগিক প্রয়াসে ব্যবহার করি। নেতিবাচক, অতি নিমগ্নতা পরিহার করি এবং উন্নত দেশ গঠনে ব্রতী হই।
মিসবাহুল ইসলাম
শিক্ষার্থী, দারুল হেদায়া ইসলামিক ইনস্টিটিউট
বারিধারা, ঢাকা