অনলাইনে বাগান

পরিকল্পনা থাকলে এ পাথুরে শহরে যে কোনো গাছ, এমনকি শাকসবজিও ফলানো সম্ভব। ছাদে কিংবা বাড়ির ভেতরে বেদানা, ডালিম, আঙুর, পেয়ারার পাশাপাশি কলা, ডাঁটা, লাউ অনায়াসে উৎপাদন করা যায়। ফুলের চাষ করে বাড়ির সৌন্দর্য বাড়ানো তো আছেই। কিন্তু পরিকল্পনার অভাবে অনেকে সে পথে হাঁটতে চান না। তাছাড়া ছুটিছাটায় বেড়াতে গেলে গাছপালার যত্নআত্তিরও কেউ থাকে না। নগরবাসীসহ দেশের সব জায়গায় এ সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে অনলাইনে চালু করতে পারেন বাগান ব্যবসা।

অল্পবিস্তর অভিজ্ঞতা, এমনকি কোনো অভিজ্ঞতা না থাকলেও চলবে—গার্ডেনিং হতে পারে আপনার পূর্ণকালীন কাজ। যুক্তরাষ্ট্রের একজন মালি অনলাইনভিত্তিক ঘণ্টায় ১৮ থেকে ২০ ডলার উপার্জন করেন। তথ্যটি তাদের ব্যুরো অব লেবার স্ট্যাটিকসের। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে তাদের পাশে রয়েছে ন্যাশনাল গার্ডেনিং অ্যাসোসিয়েশন ও আমেরিকান হর্টিকালচার সোসাইটি।

অনলাইনে বাগানসেবার প্রথম উপকারিতা হচ্ছে, সেখানে ধরাবাঁধা অফিসিয়াল নিয়মকানুনের বেড়াজাল নেই। একজন মালি হিসেবে আপনি শারীরিক পরিশ্রমের যথেষ্ট সুযোগ পাবেন। পাবেন অফুরন্ত সময়। ব্যস্ত টাইমলাইন নিয়ে যারা হিমশিম খান, তাদের কাছে আপনার চাহিদাও বেড়ে যাবে। একটু মেধা খাটালে নিয়মিত কাস্টমার পাবেন। তাছাড়া মৌসুমি খরিদ্দারও পেয়ে যাবেন—তাদের  অগোছালো বাগানের যত্ন নিতে পারবেন। আয় করতে পারবেন বেশ।

অনলাইনে প্রথমে নিজস্ব ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলুন। এটাই হবে আপনার ব্যবসার মেরুদণ্ড। নজরকাড়া করে বানিয়ে ফেলুন ওয়েবপেজটি। ওয়েবসাইটে লগঅনের সুযোগ রাখুন। গ্রাহকরা সহজে সেখানে প্রবেশ করে একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট দিয়ে রাখতে পারেন। আগ্রহী ক্রেতাদের তালিকা রাখুন। ওয়েবসাইটটিতে নিজস্ব ডোমেইন ও হোস্টিং রাখুন। ব্যবসার প্রচারে অবশ্যই ফেসবুক ব্যবহার করবেন। কী কী সেবা দেবেন তার তালিকা করে বিজ্ঞাপন দিতে থাকুন। যেমন গাছে গাছে রংবেরঙের ফুল ফোটানো, ফল ধরানো মালির কাজ। বীজ বপন, পানি দেওয়া, বেড়া নির্মাণ, আগাছা পরিষ্কারও তার কাজ। এসব সেবা চাওয়ামাত্র বাগানমালিককে দিতে থাকবেন। মার্কেটপ্লেসে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। বিজনেস কার্ড তৈরি করুন। কার্ডটিকে আকর্ষণীয় করুন। নাম, ফোন নম্বর, ঠিকানা, ওয়েব অ্যাড্রেস জুড়ে দিন। হাতের কাছে রাখুন কার্ড। সময় সুযোগমতো কার্ড দিন।

কখনও কখনও শাবল, কাস্তে, মই, নিড়ানি প্রভৃতি সরবরাহ করার প্রয়োজন হতে পারে। তাই এসব যন্ত্রপাতি কিনে রাখুন। অথবা পাইকারি বিক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। তাদের সঙ্গেও সম্পর্ক তৈরি করে ফেলুন। প্রথম দিকে যাতায়াত খরচ নিজের পকেট থেকে দিতে থাকুন।

অনলাইন ব্যবসায় বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই। এমনকি টেক স্যাভি না হলেও চলবে। ধৈর্য ধরে সময় ও শ্রম দিন। সফল হবেন। কিছুদিন বা কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে প্রথম কাজ পেতে। তাই হতাশ হবেন না। প্রচার চালিয়ে যান।