Print Date & Time : 5 August 2025 Tuesday 8:14 am

অনলাইন শিক্ষা বাস্তবায়নে সমন্বিত প্রযুক্তি, বিধিমালা প্রয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক: অনলাইন শিক্ষা বাস্তবায়নে সমন্বিত প্রযুক্তি ও বিধিমালা প্রণয়নসহ বেশ কিছু বিষয়ের উপর জোর দিয়েছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি বাংলাদেশের একমাত্র গবেষণা ভিত্তিক বেসরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এক্সিম ব্যাংক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ (ইবিএইউবি) কর্তৃক আয়োজিত প্রথম আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশন-বিএইচবিএফসি এর চেয়ারম্যান, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড-আইবিবিএল এর নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যায়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ এর অধ্যাপক ড. মোঃ সেলিম উদ্দিন, এফসিএ, এফসিএমএ ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ।

প্রবন্ধের মূল বিষয় ছিল ‘অনলাইন লার্নিং ইন হায়ার ষ্টাডিজ: বাংলাদেশ পারসপেকটিভ’। ড. সেলিম তার মূল প্রবন্ধে বিশ্বব্যাপী এবং বাংলাদেশের উচ্চ শিক্ষার উপর কভিড-১৯ এর প্রভাব তুলে ধরার পাশাপাশি উচ্চ শিক্ষায় অনলাইন লার্নিং এর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিকসমূহ, বিভিন্ন গবেষণার ফলাফল, সুযোগ সুবিধা, সম্ভাবনা ও সম্ভাব্যতাসহ ইহার কার্যকারীতা এবং সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ সমূহ বাংলাদেশের আলোকে আলোচনা করেন।

একই সাথে তিনি এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় অনলাইন শিক্ষায় কার্যকরী প্রয়োগের জন্য শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন বিষয়াদি ছাড়া ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের বিষয়ে আলোকপাত করেন। মূল প্রবন্ধে কভিড-১৯ এর প্রভাবে শিক্ষা ব্যবস্থার অচলাবস্থা, বাংলদেশের প্রযুক্তির ব্যবহার, কেন, কোথায়, কিভাবে, কোন প্রযুক্তি ব্যবহারে বিশ্বে অনলাইন লার্নিং চলমান আছে তার সবিশেষ উল্লেখ করেন।

এ ছাড়া প্রযুক্তি গ্রহণ যোগ্যতার মডেল, শিক্ষক, ছাত্র ও বিষয়বস্তুর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক, ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, সন্তুষ্টি, নীতিসহ অনলাইন শিক্ষার কার্যকারিতা গুনগত মান পরীক্ষা, পরীবিক্ষণ ও পরিমাপের জন্য বায়োমিটার নিয়ে আলোকপাত করেন। এ ওয়েবিনারে সভাপতিত্বে করেন ইবিএইউবি’র উপাচার্য প্রফেসর ড. এবিএম রাশেদুল হাসান। 

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের পর বক্তব্য  প্রদান করেন প্রফেসর ড. আব্দুল হালিম মোহাম্মদ নূর, রেক্টর,  ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি, মারা, মেলাকা, মালয়েশিয়া। তিনি তার বক্তব্যে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থার উৎপত্তি ও বৈশিষ্ট উল্লেখপূর্বক  এ কার্যক্রমের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও অভিজ্ঞতাসমূহ তুলে ধরেন। তিনি ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি, মারা, মেলাকা, মালয়েশিয়ায় বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত উপস্থাপনের মধ্যে দিয়ে সার্বিক অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের দৃশ্যপট উপস্থাপন করেন। অনলাইন শিক্ষা বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসের ব্যবহার করার পাশাপাশি শিক্ষক শিক্ষার্থী সংশ্লিষ্টতা, দ্রুত গতির ইন্টারনেট, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণসহ ইত্যাদি বিষয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

পরবর্তীতে বক্তব্য উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. ওজাত দারোজাত, রেক্টর, ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি, টার্বুকা, জাকার্তা, ইন্দোনেশিয়া। তিনি অনলাইন শিক্ষার  প্রয়োজনীয়তা উল্লেখপূর্বক তা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় বিধিমালা প্রণয়ন এবং সমন্বিত প্রযুক্তির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এছাড়াও তিনি ই-লার্নিং গর্ভননেন্স, নেটওয়ার্ক আর্কিটেকচার, স্টুডেন্ট সাপোর্ট সার্ভিস, ইন্টারনাল কোয়ালিটি এ্যাসুরেন্স এর উপর তার সুচিন্তিত মতামত ব্যাখ্যা করেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতি ইবিএইউবি এর উপাচার্য প্রফেসর ড. এবিএম রাশেদুল হাসান সভাপতির বক্তব্যে বলেন, বর্তমান বিশ্বে শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে শুরু করে বিশ্ব ব্যবসা ও প্রশাসনিক বিভিন্ন কর্মকান্ড অনলাইন এর মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। কয়েক দশক ধরে উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে অনলাইন লার্নিং পদ্ধতি প্রচলিত থাকলেও বর্তমান কভিড-১৯ মহামারির পরিস্থিতিতে এর প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। তিনি আরো উল্লেখ করেন ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ডিজিটালাইজড করার যে পদক্ষেপ সরকারের রয়েছে তাতে অনলাইন লার্নিং একটি যুগোপযোগী মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

সমাপনী বক্তা হিসেবে বক্তব্য উপস্থাপন করেন ইবিএইউবি-এর বোর্ড অব  ট্রাস্টিজ এর সদস্য এবং এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী ড. মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া। তিনি তার বক্তব্যে উচ্চ শিক্ষায় অনলাইন ব্যবস্থার যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষার মান উন্নয়নে সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান এবং ওয়েবিনারে অংশগ্রহণকারী দেশ ও বিদেশের সকল বক্তা, বিশেষজ্ঞ ও শ্রোতাদের ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠানের মাষ্টার অব সিরোমনির দায়িত্ব পালন করেন ড. মোস্তফা মাহমুদ হাসান, প্রধান, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ও অনন্যা প্রভাষক, সিনিয়র প্রভাষক, কৃষি অনুষদ ইইএইউবি এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকিউএসি এর পরিচালক প্রফেসর ড. মো: শামীমুল হাসান।

উল্লেখ্য, এ ওয়েবিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থীদের পাশাপশি বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার একাডেমিশিয়ানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করেন। এ আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারে দেশ বিদেশের ৭৩৩ জন অংশগ্রহণকারী নিবন্ধন করেন।