Print Date & Time : 3 September 2025 Wednesday 2:09 am

অন্তত ১৮ শতাংশ জনগোষ্ঠী প্রশিক্ষিত হলে নিরাপদ এলাকা গড়ে তোলা সম্ভব: ফায়ার ডিজি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের (এফএসসিডি) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন বলেছেন, ব্যক্তিগতভাবে আমরা সচেতন হলে অগ্নিদুর্ঘটনা অনেক ক্ষেত্রে কমিয়ে আনা সম্ভব। ফায়ার সার্ভিস থেকে একটি গাইডলাইন দেয়া আছে। ১০০ জনে ১৮ জন অগ্নিনির্বাপণে প্রশিক্ষিত হলে নিরাপদ স্থান, ভবন বা এলাকা গড়ে তোলা সম্ভব। যে ভবন তৈরি করা হোক না কেন, হয় বসবাস বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হচ্ছে। অথবা অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ভবন যিনিই ব্যবহার করুন না কেন, অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থায় একটু সচেতন হলেই অগ্নিঝুঁকি থেকে আমরা বাঁচতে পারব।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (বিএফডিসি) অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এক ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।   ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে বিতর্ক প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয়। 

এফএসসিডির ডিজি বলেন, একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে আমরা যখন একটি ভবন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান তৈরি করি, তখন যদি সে প্রতিষ্ঠানে ১০০ টাকা খরচ করি, সেখান থেকে আমি ২ টাকা অগ্নি নিরাপত্তার জন্য ব্যবহার করি, তাহলে সাধারণভাবে ধরে নেয়া যায় যে আমরা নিরাপদে থাকব। এভাবেই আমরা এই সমাজ, এই দেশকে নিরাপদ করতে পারব।

অগ্নিদুর্ঘটনার সমস্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে অনেকগুলো সমস্যা আছে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে অগ্নিদুর্ঘটনার স্থল বা এলাকায় অতিরিক্ত ও অযাচিত লোকজনের উপস্থিতি। উৎসুক জনতার কারণে আমাদের কাজ করতে অনেক বেগ পেতে হয়। আরেকটি কারণ হচ্ছে পানির উৎস। ঢাকা শহরে পুকুরের সংখ্যা হাতেগোনা কয়েকটি।

ফায়ার স্টেশনের কথা উল্লেখ করে ডিজি বলেন, ২০০৮ সালে এই সরকার যখন ক্ষমতায় আসে, তখন ফায়ার স্টেশন ছিল ২০৪টি। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন অনুযায়ী প্রতিটি উপজেলায় ন্যূনতম পক্ষে ফায়ার স্টেশন হতে হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের ফায়ার স্টেশন হবে ৭৩৫টি। শিল্পাঞ্চলে আমরা আরও বেশি ফায়ার স্টেশন স্থাপন করতে যাচ্ছি। 

ফায়ার সার্ভিসের সরঞ্জামের বিষয়ে তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস একটি সক্ষম প্রশিক্ষিত বাহিনী। আমাদের ৯৫ পার্সেন্ট ইকুইপমেন্ট আছে। সরঞ্জামাদি ও ক্যাপাসিটি বিল্ডিং- এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটা বাড়বে ও পরিবর্তন হবে, এটাই স্বাভাবিক।

পাঁচটি সুপারিশ হলো:  আগুন লাগা প্রতিরোধসহ যেকোনো ধরনের দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসে, বিল্ডিং কোড বাস্তবায়নে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকে নিয়ে একটি রোড ম্যাপ তৈরি করা। 

২০১০ সালের প্রস্তাবিত বিল্ডিং কোড ১৩ বছর পর পাস হয়েছে, ২০২২ সালে। ইতোমধ্যে প্রযুক্তিগত আরও বেশ উৎকর্ষ ঘটেছে। তাই বর্তমান বিল্ডিং কোড সময়োপযোগী করে আধুনিকীকরণের পদক্ষেপ নেয়া। 

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো আমাদের দেশে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিতে থাকা ভবনগুলোর বিরুদ্ধে শুধু নোটিশ নয়, আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা দেয়া। 

অগ্নিনির্বাপক সংস্থাগুলোর বিদ্যমান কাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি আধুনিক ফায়ার ইঞ্জিন, ওয়াটার হাইড্রেন্ট, উন্নত অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম সরবরাহ করা। 

রাজউক কর্তৃক ভবন ব্যবহারের সনদ না দেয়া পর্যন্ত বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি ও টেলিফোন সংযোগ না দেয়া প্রভৃতি।