শেয়ার বিজ ডেস্ক: কিউবায় বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিয়েছে। পুরো দেশেই বিদ্যুৎ ব্ল্যাকআউটের কারণ হলো, দেশটির সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অর্থসংকটে ভুগতে থাকা কিউবায় গত কয়েক দিন ধরে বিদ্যুতের সংকট দেখা দিলেও এ-ই প্রথম পুরো দেশই বিদ্যুৎহীন হওয়ার ঘটনা ঘটল। খবর: রয়টার্স।
গত শুক্রবার কিউবার সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটি অচল হয়ে পড়ার পর মধ্য আমেরিকার দেশটিতে ব্ল্যাকআউট দেখা দেয়। বন্ধ করে দেয়া হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গণপরিবহন স্থবির হয়ে যায় এবং ট্রাফিক-ব্যবস্থা একপ্রকার অচল হয়ে পড়ে। গত ৩০ বছরের মধ্যে দেশটিতে এটি সবচেয়ে ভয়াবহ বিদ্যুৎ সংকট। কিউবার জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ সরবরাহ বিভাগের প্রধান লাজারা গুয়েরা দ্বীপদেশটির আটটি কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে সবচেয়ে বড় ‘আন্তোনিও গুতেরেস পাওয়ার প্ল্যান্ট’ অপ্রত্যাশিতভাবে বন্ধ ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সরকার কিউবার ১ কোটি ১০ লাখ বাসিন্দার জন্য যত দ্রুত সম্ভব এই পরিষেবা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য কাজ করছে।
বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে কিউবায় লোডশেডিং চলছে ব্যাপকভাবে। কোনো কোনো প্রদেশে দিনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ২০ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ না থাকার খবর পাওয়া গেছে। ঠিক এই সময় এই ব্ল্যাকআউটের ঘটনা ঘটল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল মেরেরো গত বৃহস্পতিবার দেশটিতে ‘জ্বালানি জরুরি অবস্থা’ জারি করেছেন। জরুরি খাত বাদে সরকার কিউবার সব ধরনের জনসেবা কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। আগামীকাল সোমবার পর্যন্ত দেশের সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রাজধানী হাভানার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাসপাতাল এবং অন্যান্য জরুরি সেবা জেনারেটর চালিয়ে সচল রাখার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
মধ্য হাভানায় বসবাসকারী এলোয় ফন বলেন, এটা খুব বাজে পরিস্থিতি। এটি আমাদের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ভঙ্গুরতা দেখায়। আমাদের কাছে কোনো মজুত নেই, দেশকে টিকিয়ে রাখার মতো কিছুই নেই।
কিউবা সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর থেকেই পশ্চিমা বিশ্বের বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের বিধিনিষেধের কারণে অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি, খাদ্যসংকট, ওষুধ, জ্বালানি ও সুপেয় পানির সংকটেও ভুগছে দেশটি। বাইরের দেশ থেকে কোনো ত্রাণসহায়তা না থাকায় অনেক কিউবান দেশ ছেড়েছেন।