অপসারণ হলেন বেলাবো উপজেলা চেয়ারম্যান

প্রতিনিধি, নরসিংদী: নরসিংদীর বেলাবো উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ সমসের জামান ভ‚ইয়া রিটনকে চেয়ারম্যানের পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। বেলাবো উপজেলা পরিষদের দুই ভাইস চেয়ারম্যানের দেয়া অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। গত রোববার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ সামসুল হক স্বাক্ষরিত এক পত্রের মাধ্যমে তাকে অপসারণ করা হয়। একই সঙ্গে উপজেলার প্যানেল চেয়ারম্যান-১ মো. মনিরুজ্জামান ভঁ‚ইয়া জাহাঙ্গীরকে আর্থিক ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে।

এর আগে ওই উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যানদের সম্মানী ভাতা, ভ্রমণ ভাতা ও আপ্যায়ন ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সমসের জামান রিটনকে কেন অপসারণ করা হবে না, সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। পরবর্তী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে এর ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য তাকে অনুরোধ করা হয়। গত ৫ মার্চ নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কাছে আইনগত সুরাহা চেয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের প্যাডে লিখিত আবেদন করেছিলেন দুই ভাইস চেয়ারম্যান।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বেলাবো উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান ভ‚ঞা জাহাঙ্গীর ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শারমিন আক্তার খালেদা প্রতি মাসের ৩/৪ তারিখে সোনালী ব্যাংকের বেলাবো শাখা থেকে নিজেদের সম্মানী ভাতা উত্তোলন করেন। ২০১৯ সালের নভেম্বরে মাসিক ভাতা ২৭ হাজার, ভ্রমণ ভাতা আট হাজার, আপ্যায়ন ভাতা পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যানের চার হাজার ৪২১ টাকা ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের চার হাজার ৩৬৬ টাকার চেক যথারীতি অফিস সহকারী তৌফিক আফ্রাদের নিকট দাবি করলে তিনি জানায়, উপজেলা চেয়ারম্যান পুরো চেক বই তার কাছ থেকে নিজের হেফাজতে নিয়ে গেছেন।

পরবর্তীতে ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৪ ডিসেম্বর উপজেলা চেয়ারম্যান তাদের টাকা উত্তোলন করেছেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করা হলে তিনি দ্রæত সুরাহা করতে চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানান। কিন্তু দুই মাস অতিবাহিত হলেও বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন দুই ভাইস চেয়ারম্যান। এছাড়াও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিভাগীয় কমিশনারের কাছে অনুলিপি দেয়া হয়। এ বিষয়ে গত ৩ ডিসেম্বর নরসিংদী সার্কিট হাউসে তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (যুগ্ম সচিব) খান মো. নূরুল আমিনের নেতৃত্বে তদন্ত কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। তদন্ত শেষে নিয়মবহিভর্‚ত অর্থ আত্মসাতের কারণে উপজেলা পরিষদ আইনে অপসারণ, অনাস্থা ও পদ শূন্যতা বিধিমালা ২০১৬ মোতাবেক চেয়ারম্যানের পদ থেকে কেন অপসারণ করা হবে না, সে মর্মে ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।