শেয়ার বিজ ডেস্ক: কানাডার অর্থনীতি চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অপ্রত্যাশিতভাবে সংকুচিত হয়েছে। এই সময়ে দেশটির প্রবৃদ্ধি হয়েছে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। এছাড়া গত সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবসে দেশটির পুঁজিবাজারে ধস নামে। খবর: রয়টার্স।
উত্তর আমেরিকার শিল্পোন্নত এই দেশটিতে গত জুলাইয়ে প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় শূন্যের কোঠায়। এমন পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মন্দা কাটাতে কানাডার কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এগিয়ে আসতে হতে পারে।
ব্যাংক অব কানাডার (বিওসি) পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশটির মোট প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) হতে পারে ১ দশমিক ৫ শতাংশ। অন্যদিকে বিশ্লেষকরা মনে করেছিলেন তা হতে পারে ১ দশমিক ২ শতাংশ। গত মে মাসের তুলনায় জুনে জিডিপি কমেছে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ।
নর্থ আমেরিকান ইকোনমিস্ট ফর ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের উপ-প্রধান স্টেফেন ব্রাউন বলেন, কানাডা এরই মধ্যে মাঝারি ধরনের অর্থনৈতিক মন্দায় পড়েছে। আগামী সপ্তাহে ব্যাংক অব কানাডা সুদের হার অপরিবর্তিত রাখবে কি না, তা নিয়ে কিছুটা সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
দেশটির পরিসংখ্যান সংস্থা স্ট্যাটিসটিকস কানাডা জানিয়েছে, আবাসন খাতে বিনিয়োগ কমার পাশাপাশি রপ্তানি ও নাগরিকদের প্রতিদিনকার খরচ কমে যাওয়ায় অর্থনীতিতে এই মন্দা দেখা দিয়েছে। সংস্থাটি আরও জানায়, নতুন অবকাঠামো কম গড়ে ওঠায় এবং পুরোনো অবকাঠামোর সংস্কার কম হওয়ায় আবাসন খাতে বিনিয়োগ কমেছে।
কানাডায় গত জুনে কয়েকটি অঞ্চলে দাবানল সৃষ্টি হওয়ায় তা দেশটির খনি, পাথরশিল্প ও রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এসব কারণে কানাডীয় মুদ্রার দাম মার্কিন ডলারের তুলনায় শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। শিল্পোন্নত অন্য ১০ দেশের মুদ্রার বিপরীতেও কানাডীয় ডলারের দাম কমেছে।
গত শুক্রবার এই জিডিপির প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। আগামী বুধবার ব্যাংক অব কানাডা নীতি সুদহার নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। এর আগে জিডিপির প্রতিবেদনকে সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ তথ্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সম্প্রতি রয়টার্সের এক জরিপে ৩৪ অর্থনীতিবিদ অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ৩১ জনই ব্যাংক অব কানাডার সুদহার অপরিবর্তিত রাখার ব্যাপারে একমত। এই অর্থনীতিবিদরা গত ২৪ থেকে ৩০ আগস্ট তাদের মতামত দেন।
বিএমও ক্যাপিটাল মার্কেটসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ডগ পোর্টার বলেন, সার্বিক অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, তৃতীয় প্রান্তিকেও ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি আনতে কানাডাকে বেগ পেতে হবে।
টিডিব সিকিউরিটিজের চিফ কানাডা স্ট্র্যাটেজিস্ট অ্যান্ড্র– কেলভিন বলেন, ব্যাংকের পক্ষে এটা বলা সম্ভব যে, আর্থিক নীতি কাজ করছে এবং তারা চাইলে মাসিক সভা স্থগিত করতে পারে।
এদিকে গত সপ্তাহে কানাডার পুঁজিবাজারে স্বাভাবিক লেনদেন ব্যাহত হয়। গত বুধবার টরেন্টো স্টক এক্সচেঞ্জে সফটওয়্যার সমস্যা দেখা দেয়ার পর ট্রেডিং স্থগিত করা হয়। তবে ভিন্ন স্থান থেকে জরুরি ভিত্তিতে কাজ চালিয়ে নেয়া হয়। সপ্তাহের শেষ দিনে এসঅ্যান্ডপি/টিএসএক্স কম্পোজিট সূচক শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ কমে। সেদিন ২৩৬টি শেয়ারের মধ্যে ১৪৬টির বেঞ্চমার্কের পতন হয়। বৃদ্ধি পায় ৮০টি শেয়ার। ক্যানাবিস স্টক এবং স্বাস্থ্য খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারদর কমে যায়। এদিন টপ গেইনারদের মধ্যে শীর্ষে ছিল টারকুইজ হিল রিসোর্সেস লিমিটিড।
টিএমএক্স গ্রুপের মুখপাত্র ক্যাথেরিন কি এক ইমেইলে বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণ উদ্ঘাটন করা হয়। এ ধরনের উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।