Print Date & Time : 8 September 2025 Monday 10:26 pm

অবশেষে বাচেনার পেট থেকে অপসারণ হলো সার্জিক্যাল আরটারি

প্রতিনিধি, চুয়াডাঙ্গা: অস্ত্রোপচারের দীর্ঘ ২০ বছর পর বাচেনা খাতুন নামের এক গৃহবধূর পেট থেকে সার্জিক্যাল আরটারি অপসারণ করেছেন চিকিৎসকরা।  সোমবার (১০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেই সার্জিক্যাল আরটারি অপসারণ করা হয়েছে।

বাচেনা খাতুন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা ইউনিয়নের হাপানিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদের স্ত্রী।
জানা যায়, গত ৪ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের নারী সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন বাচেনা খাতুন।  অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিকসের কারণে অস্ত্রোপচার বার বার পিছিয়ে যাচ্ছিল। আজ ডায়াবেটিকস পরীক্ষার পর দুপুর ১২টার দিকে অস্ত্রোপচার শুরু হয়। দুপুর সোয়া একটার দিকে তার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি কনসালটেন্ট (সিনিয়র) ডা. ওয়ালিউর রহমান বলেন, ৪ জানুয়ারি থেকে বাচেনা খাতুনকে আমরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিকসের জন্য অস্ত্রোপচার পিছিয়ে যাচ্ছিল। ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণ থাকায় আজ তার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তার পেট থেকে সার্জিক্যাল আটারি আপসারণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ২৫ মার্চ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রাজা ক্লিনিকে পিত্তথলির পাথর অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন ওই নারী। অস্ত্রোপচার করেছিলেন সার্জারি বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক মিজানুর রহমান। তার সঙ্গে সহকারী হিসেবে ছিলেন রাজা ক্লিনিকের পরিচালক ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা ও অ্যানেস্থেসিয়া করেন ডা. তাপস কুমার।
অস্ত্রোপচারের এক সপ্তাহ পর বাচেনা খাতুনকে প্রেসক্রিপশন দিয়ে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু সুস্থ হতে পারেননি। পেটের ব্যথা নিয়ে অসহ্য যন্ত্রণায় বছরের পর বছর ডাক্তারের কাছে ছুটেছেন তিনি। খুইয়েছেন অর্থ-সম্পদ। গত ২০-২৫ দিন আগে রাজশাহীর একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক্স-রে করালে পেটে সার্জিক্যাল আরটারি সন্ধান পাওয়া যায়। তখন জানা যায়, রাজা ক্লিনিকে পিত্তথলির পাথর অপারেশনের সময় বাচেনার পেটে সার্জিক্যাল আরটারি রেখেই সেলাই করেছেন চিকিৎসক। পরে পুনরায় ডা. রাজার শরণাপন্ন হলে তিনি ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা বলে বাচেনাকে ফেরত পাঠান।  

এদিকে ৫ জানুয়ারি অস্ত্রোপচার করা চিকিৎসক ও ক্লিনিক মালিকের বিরুদ্ধে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেহেরপুর সিভিল সার্জন জাওয়াহেরুল ইসলাম। কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর গাংনীর সেই রাজা ক্লিনিকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান এই কর্মকর্তা|