শেয়ার বিজ ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে তাপপ্রবাহ আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। দাবানলের ঝুঁকি বাড়তে থাকায় ভিক্টোরিয়া রাজ্যের কয়েকটি অঞ্চলে সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। খবর: রয়টার্স।
দেশটির আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, গতকাল রোববার ভিক্টোরিয়া রাজ্যের কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১১৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট) পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। রাজধানী মেলবোর্নে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট) পর্যন্ত বাড়ার পূর্বাভাস রয়েছে। রাজ্যের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মিলডুরা শহরে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট) পৌঁছাতে পারে। স্থানীয় সময় রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় তাপমাত্রা ৩২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৯১ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছুঁয়েছে, যা জানুয়ারি মাসের গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রার থেকেও বেশি।
ব্যুরো অব মিটিওরলজির কর্মকর্তা মিরিয়াম ব্র্যাডবারি অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন (এবিসি) টেলিভিশনকে জানান, রোববার ভিক্টোরিয়াতে তাপমাত্রা শীর্ষে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে। আগুনের বিপৎসীমা আরও বেশি অঞ্চলে বাড়তে দেখা যাচ্ছে। আবহাওয়া দপ্তরের ওয়েবসাইটে ভিক্টোরিয়ার তিনটি অঞ্চলে এরই মধ্যে আগুন জ্বালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এসব অঞ্চলে দাবানলের ঝুঁকি চরম পর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া, নিউ সাউথ ওয়েলস ও তাসমানিয়া রাজ্যগুলোয়ও তাপপ্রবাহ সতর্কতা জারি করা হয়।
সাধারণত এ সময় তীব্র তাপপ্রবাহ ও দাবানলের ঝুঁকিতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। গত কিছু মৌসুমে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে গত সপ্তাহে ভিক্টোরিয়ার গ্রাম্পিয়ান্স ন্যাশনাল পার্কে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। দাবানলে অনেক বাড়িঘর ও কৃষিজমি পুড়ে যায়। এ কারণে আগুন জ্বালানোয় সতর্কতা জারি করেছে দেশটি। এর আগে ২০১৯-২০ সালের ‘ব্ল্যাক সামার’ নামে অভিহিত দাবানলে অস্ট্রেলিয়ায় তুরস্কের আয়তন সমান এলাকা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। প্রাণ হারিয়েছিলেন ৩৩ জন এবং মারা গিয়েছিল কোটি কোটি প্রাণী। ২০১৯ সালের জুন থেকে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় চলে এই ভয়াবহ দাবানল। অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টারি লাইব্রেরির প্রকাশিত এক গবেষণাপত্র অনুযায়ী, ভয়ানক এই দাবানল সৃষ্টির মূল কারণ ছিল তুলনামূলক শুষ্ক আবহাওয়া আর স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি মাত্রায় বজ্রপাত। এছাড়া দেশটির দাবদাহ, দাবানলের অনুকূল পরিমাণ বায়ুতে উপস্থিত জলীয় বাষ্প এবং স্থানীয় কিছু গাছপালা (যেমন: ইউক্যালিপটাস গাছ) দাবানলের মাত্রা তীব্রতর হতে সহায়তা করেছিল। ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ায় গরমের তীব্রতা মারাত্মক বেড়ে গিয়েছিল। তাপমাত্রার এই বৃদ্ধির কারণেই অস্ট্রেলিয়ার ফায়ার ডিপার্টমেন্টের কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তীব্র দাবানলের সম্ভাবনা আগে থেকে জানিয়ে দিয়েছিলেন।