Print Date & Time : 8 July 2025 Tuesday 2:08 am

আইনজীবীর কাছে ২৬ কোটি টাকার হিসাব চান হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা আদায়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউসুফ আলী ‘ফি হিসেবে’ ১৬ কোটি টাকা পেয়েছেন বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছেন তার আইনজীবী। এছাড়া শ্রমিকদের কাছ থেকে পাওয়া ‘অন্যান্য খরচ’ বাবদ আরও ১০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে বলে আদালতকে জানানো হয়।

আদালতের নির্দেশে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চে ইউসুফ আলীর দাখিল করা প্রতিবেদনে এই হিসাব দেয়া হয়। তবে এই ১৬ কোটি টাকা ইউসুফ আলী আদৌ ‘ফি’ হিসেবে পেয়েছেন কি না এবং ‘অন্যান্য খরচ’ বাবদ আরও ১০ কোটি টাকা কে, কী বাবদ পেয়েছেন, বৃহস্পতিবার তা ‘পরিষ্কারভাবে’ হলফনামা আকারে দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আদালতে-আদালতে শ্রমিক-কর্মচারীদের আইনজীবী ইউসুফ আলীর পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আহসানুল করিম, সাঈদ আহমেদ রাজা, রবিউল আলম বুদু, অনীক আর হক। অন্যদিকে গ্রামীণ টেলিকমের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান।

পরে আহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইউসুফ আলী এবং অন্যান্য আইনজীবী যারা ছিলেন, তাদের ১৬ কোটি টাকা প্রদান করা হয়। আরও ১০ কোটি টাকা ট্রেড ইউনিয়নের অ্যাকাউন্টে আছে। সুতরাং যে টাকা প্রদান করা হয়েছে, তা ফি বাবদই প্রদান করা হয়েছে।’

আদালতে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে এবং ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও একই কথা বলা হয়েছে বলে উল্লেখ করে এই আইনজীবী বলেন, তারাও বলেছে, এটা শ্রমিকদের ফি বাবদ প্রদান করা হয়েছে। টেলিকমের কাছ থেকে অ্যাডভোকেট ইউসুফ আলী সাহেব কোনো টাকা গ্রহণ করেননি, তাদের অন্য কোনো অ্যাডভোকেটও গ্রহণ করেননি। তবে ইউসুফ আলী ‘অ্যাডভোকেট ফি’ হিসেবে যে অর্থ নিয়েছেন, এটি আদালত ‘বিষয়বস্তু’ হিসেবে দেখছে না বলে দাবি করেন আহসানুল করিম।

তিনি বলেন, কোর্টের মুখ্য বিষয় ছিলÑএই যে ট্রানজেকশন এর স্বচ্ছতা কী, তা দেখার জন্য। ইউসুফ আলী সাহেব কত টাকা নিয়েছেন, এটা পরিষ্কার করেছেন, কোর্টের এটি বিষয়বস্তু নয়। কোর্ট শুধু দেখতে চেয়েছেন, ট্রানজেকশন যেটি হয়েছে, এর স্বচ্ছতা কী? এফিডেভিট যেটি ছিল, সেটি কোর্টের দৃষ্টিতে মনে হয়েছেÑএটি সম্পূর্ণ পরিষ্কারভাবে উল্লিখিত হয়নি।”

এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন রেখেছেন আদালত। সেদিন ইউসুফ আলীকে এ বিষয়ে ‘পরিষ্কারভাবে’ আদালতকে জানাতে হবে।

এর আগে গত ৩০ জুন গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা ৪৩৭ কোটি টাকা পরিশোধের বিষয়ে উভয় পক্ষকে যৌথভাবে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার তারা আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে।

গত ২৩ মে শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা ৪৩৭ কোটি টাকা পরিশোধের আশ্বাসে গ্রামীণ টেলিকম ও তার প্রতিষ্ঠাতা নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা ১১০টি মামলা প্রত্যাহার করার বিষয়টি আদালতকে উভয় পক্ষ জানিয়েছিল।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে কর্মীদের পক্ষ থেকে গ্রামীণ টেলিকমের অবসায়ন চেয়ে হাইকোর্টে একটি মামলা করা হয়। এছাড়া উচ্চ আদালতে আরও দুটি রিট আবেদন এবং তিনটি আদালত অবমাননার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল।