Print Date & Time : 7 August 2025 Thursday 1:21 pm

আইপিও কোটার মেয়াদ বাড়ল ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: ইনিশিয়াল পাবলিক অফারের (আইপিও) কোটা নিয়ে দুশ্চিন্তা কেটেছে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের কোটার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত।

সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সাইফুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, ‘মূলত ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের কথা ভেবে সময় বাড়ানোর আবেদন করেছিলাম। ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। আশা করছি, ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী এতে উপকৃত হবেন।’

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে পুঁজিবাজার ধসে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা ২০১২ সাল থেকে আইপিও কোটা সুবিধা ভোগ করে আসছেন। এর সময়সীমা গত ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে সময় বাড়ানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিল বিএসইসি।

প্রথমবার ২০১২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৮ মাস সময়ে ২০ শতাংশ কোটায় আবেদনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। ক্ষতিগ্রস্ত আবেদনকারীর তালিকা তৈরি করে জমা দেওয়া হয় কমিশনে। এতে ৯ লাখ ৩৩ হাজার ২৮০ ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীকে কোটা সুবিধার আওতায় নেওয়া হয়। তালিকায় রয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ২০৪ ব্রোকারেজ হাউসের সাত লাখ ৩৯ হাজার ৮৮৩ জন, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ১০৩টি ব্রোকারেজ হাউসের এক লাখ ৫৪ হাজার ২৭৭ জন এবং ২৫ মার্চেন্ট ব্যাংকের ৩৯ হাজার ১২০ জন।

পুঁজিবাজারে অস্বাভাবিকতা রোধ, স্থিতিশীলতা ও ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর স্বার্থ রক্ষায় ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নেতৃত্বে বিশেষ সুবিধা দিতে ২০১২ সালের ৫ মার্চ স্কিম ঘোষণা করে। মিউচুয়াল ফান্ড ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের মতো নির্ধারিত কোটার মতো এই স্কিমে মার্জিন ঋণ হিসাব ও নন-মার্জিন হিসাব (বিও) উভয় ক্ষেত্রে চিহ্নিত ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর জন্য ২০১২ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত ইস্যু হওয়া সব পাবলিক ইস্যুতে ২০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত এর মেয়াদ পঞ্চমবারের মতো বাড়ানো হয়েছে।

পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫ অনুযায়ী, ফিক্সড প্রাইজ পদ্ধতিতে আইপিও ক্ষেত্রে ইলিজেবল ইনভেস্টরদের (মার্চেন্ট ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, স্টক ডিলার, ইন্স্যুরেন্স, এসেট ম্যানেজমেন্ট ও অলটারনেটিভ বিনিয়োগ ফান্ড প্রভৃতি) জন্য ৫০ শতাংশ। যার মধ্যে ১০ শতাংশ মিউচুয়াল ফান্ড ও অন্যান্য বিনিয়োগকারী ৪০ শতাংশ। সাধারণ বিনিয়োগকারীর জন্য ৫০ শতাংশ। এতে ১০ শতাংশ নন-বাংলাদেশি ও ৪০ শতাংশ অন্যান্য। বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ইলিজেবল বিনিয়োগকারীর জন্য ৬০ শতাংশ কোটা রয়েছে, যাতে ১০ শতাংশ মিউচুয়াল ফান্ড ও ৫০ শতাংশ অন্যান্য। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীর জন্য ৪০ শতাংশের মধ্যে ১০ শতাংশ নন-বাংলাদেশি ও ৩০ শতাংশ অন্যান্য বিনিয়োগকারী। বিশেষ স্কিমের আওতায় সাধারণ বিনিয়োগকারীর কোটা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা ২০ শতাংশ কোটা সুবিধা পেয়ে থাকে।

প্রথম দফায় ২০১৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত আইপিও কোটার মেয়াদ বাড়ানো হয়। এই মেয়াদ শেষের পর সাধারণ বিনিয়োগকারীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এক বছর সময় বাড়িয়ে ২০১৫ পর্যন্ত করা হয়। তৃতীয় দফায় ২০১৬ সালের জুন ও চতুর্থ দফায় ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ এর মেয়াদ বাড়ানো হয় চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

বিষয়টি নিয়ে আলাপ করলে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারী মাসুদুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, ‘আমরা এখনও ধসের রেশ কাটিয়ে উঠতে পারিনি। কোটার মাধ্যমে শেয়ার পেলে আমরা কিছুটা হলেও লোকসান পোষণের সুযোগ পাব।’