## বিদায়ী অর্থবছর রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩৫৫৮ কোটি টাকা
## আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউসের রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ২৯.৪২%
নিজস্ব প্রতিবেদক: বেড়েছে সেবার মান। মনিটরিং বৃদ্ধির ফলে কমেছে রাজস্ব ফাঁকি। দ্রুত পণ্য খালাস হচ্ছে। ফলে ব্যবসায়ী আর অংশীজনদের আস্থা তৈরি হয়েছে। তাই করোনা মহামারির মধ্যেও আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউস দিয়ে আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ। যার কারণে রাজস্ব আদায় রেকর্ড অতিক্রম করেছে। টিম আইসিডির সম্মিলিত প্রয়াসে বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছর এই কাস্টম হাউস লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম তো করেছে, সঙ্গে প্রায় ৪৬৭ কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় করেছে। রাজস্ব আদায় প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৪২ শতাংশ।
আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা বলছেন, আইসিডির ইতিহাসে এমন সাফল্য বিরল। মূলত কমিশনার টিম আইসিডিকে সঠিকভাবে পরিচালনা করায় এই সাফল্য এসেছে। এছাড়া ব্যবসায়ী ও অংশীজনদের আস্থা তৈরি, সঠিক সময়ে পণ্য খালাস, চোরাচালান ও রাজস্ব ফাঁকি রোধ আর এনবিআরের দিকনির্দেশনা মেনে আমদানি-রপ্তানিতে সহযোগিতায় করায় যেকোন সময়ের চেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে রাজস্ব আদায় আরো বেশি হতো বলে মনে করেন তারা।
কমলাপুর কাস্টম হাউস সূত্রমতে, বিদায়ী অর্থবছর এই কাস্টম হাউসের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩ হাজার ৯১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। অর্থবছর শেষে রাজস্ব আদায় হয় ৩ হাজার ৫৫৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৬৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বেশি। আর ২০১৯-২০ অর্থবছর এই কাস্টম হাউসে রাজস্ব আদায় হয় দুই হাজার ৭৪৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা। বিদায়ী অর্থবছর গত অর্থবছরের চেয়ে ৮০৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা বেশি। প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ২৯ দশমিক ৪২ শতাংশ।
আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউস সূত্রমতে, বাণিজ্য সহজীকরণে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে কাজ করছে এনবিআর। আইসিডি কাস্টম হাউস এনবিআরের নির্দেশনা মেনে কাজ করছে। সেবার মান বৃদ্ধির মাধ্যমে দ্রুত পণ্য খালাস আর রাজস্ব আদায়ে প্রতিশ্রুতিবন্ধ এই কাস্টম হাউস। সেজন্য কাস্টম হাউস দিয়ে আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে সমস্যাগুলো চিহিৃত করে তা প্রায় সমাধান করা হয়েছে। ফলে এই কাস্টম হাউস দিয়ে যেকোন সময়ের চেয়ে আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে।
সূত্র আরো জানায়, আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে অযথা হয়রানি বন্ধ করা হয়েছে। পণ্য দ্রুত খালাসে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার ফলে এই কাস্টম হাউস দিয়ে বর্তমানে দ্রুত পণ্য খালাস হয়। ফলে আমদানি-রপ্তানিকারকদের খরচ ও সময়-দুইটো সাশ্রয়ী হয়েছে। আর রাজস্ব ফাঁকি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে মিথ্যা ঘোষণা, অতিরিক্ত ঘোষণা কমে এসেছে।
সূত্র জানায়, নজরদারি বৃদ্ধির মাধ্যমে পণ্য পরীক্ষণ করা হয়, যার ফলে মিথ্যা ও অতিরিক্ত ঘোষণা কমে এসেছে। কমমেটিকস, ফুড আইটেম, ইলেকট্রনিক পণ্যসহ বেশ কিছু পণ্যে নজরদারি ও পরীক্ষণ বৃদ্ধি করায় ফাঁকি রোধ ও রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া পণ্যের দ্রুত নিলাম করার ফলে আমদানিকারকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয়েছে। আমদানি-রপ্তানিতে অংশীজনদের যেকোন সমস্যা কমিশনার দ্রুত সমাধান করার ফলে তাদের এই কাস্টম হাউসের প্রতি আস্থা তৈরি হয়েছে। রাজস্ব ফাঁকি প্রমাণিত হওয়ায় বেশ কিছু আমদানিকারক, সিএন্ডএফ এজেন্ট লাইসেন্স স্থগিত ও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত আদায় বিষয়ে আইসিডি কমলাপুর কাস্টম হাউসের একজন কর্মকর্তা শেয়ার বিজকে বলেন, ‘মূলত কমিশনারসহ টিম আইসিডির সম্বলিত প্রয়াস আর প্রচেষ্টার ফলে এই অভূতপূর্ব সাফল্য এসেছে। রাজস্ব ফাঁকি রোধ করে দ্রুত পণ্য খালাসে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। করোনাভীতি উপেক্ষা করে কমিশনারের নেতৃত্বে সকল টিম মেম্বার অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। হয়রানি বন্ধ করা হয়েছে। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। সর্বপরি ব্যবসায়ীদের আস্থা তৈরি হওয়ায় আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে রাজস্ব আদায় বেড়ে গেছে। এ সাফল্য আইসিডির একার নয়, এই সাফল্য এনবিআরেরও।’
###