নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ না হওয়ার আগেই চট্টগ্রামে নির্মিত আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার যান চলাচলের জন্য আংশিক খুলে দেওয়া হয়। গতকাল চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের উপস্থিতিতে ফ্লাইওভারের একদিক দিয়ে দুই লেনে পরীক্ষামূলকভাবে গাড়ি চলাচল শুরু হয়। পরে চারটি লেনই যান চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে পাঁচ দশমিক দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ফ্লাইওভারটির একাংশ চালুর সময় সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, ফ্লাইওভারটির মূল কাজ শেষ হয়েছে। ঈদের আগে যানজটে দুর্ভোগ থেকে নগরবাসীর স্বস্তি দিতে পরীক্ষামূলকভাবে একটি অংশ যানবাহন চলাচলের জন্য উম্মুক্ত করা হচ্ছে। আর র্যাম্প, লুপসহ সব কাজ শেষ হলে প্রধানমন্ত্রী ফ্লাইওভারটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন।
জানা গেছে, ছয়টি র্যাম্প নির্মাণের কাজ বাকি রেখেই চট্টগ্রামের দীর্ঘতম এ ফ্লাইওভারটি খুলে দেওয়া হয়। সিডিএ জানিয়েছে, ফ্লাইওভারটি চালু থাকলেও র্যাম্প নির্মাণে কোনো অসুবিধা হবে না। জিইসি মোড়ে চারটি ও ষোলশহর দুই নম্বর গেটে দুটি র্যাম্প নির্মিত হবে। ২০১৮ সালের জুন মাস নাগাদ পাঁচ দশমিক দুই কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্লাইওভারটির নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আরও চার মাস আগে অর্থাৎ আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই ফ্লাইওভারটি পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে বলে কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা। ফ্লাইওভারের প্রকল্প পরিচালক সিডিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান জানান, চট্টগ্রামের মুরাদপুর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত নির্মিত আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারটি যান চলাচলের জন্য ‘পরীক্ষামূলকভাবে’ খুলে দেওয়া হয়। নগরের যানজট নিরসনের জন্য আগেই ফ্লাইওভারটি খুলে দেওয়া হয়। তবে এরপরও ছয়টি র্যাম্প নির্মাণের কাজ চলতে থাকবে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে কাজটি পুরোপুরি শেষ করার চেষ্টা চলছে। তিনি আরও বলেন, ফ্লাইওভারের একটি লেনে কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ, অন্য লেনে কার্পেটিং চলছে। এছাড়া ওই লাইনটিতে এক্সটেনশনের কাজও করা হচ্ছে। মূল ফ্লাইওভারের ওপর কার্পেটিংয়ের কাজ শেষের পর পুরো এলাকাজুড়ে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শুরু হবে।
নগরীর প্রধান সড়কে নির্মাণাধীন এ ফ্লাইওভারের কারণে নগরবাসীকে যানজটসহ নানা ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। রাতের বেলা এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়। ফলে রাতভর ট্রাক, বাস, কাভার্ড ভ্যানসহ নানা ধরনের হাজার হাজার যানবাহন বিভিন্ন আবাসিক এলাকার মধ্য দিয়ে যাতায়াত করে। এতে আবাসিক এলাকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিঘিœত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ৫ দশমিক ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয় ২০১৩ সালের অক্টোবরে। ২০১৪ সালের ২৮ অক্টোবর এ বিষয়ে সিডিএ ও নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স-র্যাঙ্কিনের (জেভি) মধ্যে চুক্তি সই হয়। আর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৫ সালের মার্চে। ফ্লাইওভারটি নির্মাণ ব্যয় ৬৯৬ কোটি টাকা।